পাতা:বত্রিশ সিংহাসন - নীলমণি বসাক.pdf/২১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বাত্রিংশ পুত্তলিকা।
২০৭

করিলেন, সমুদয় পৃথিবী শোকান্ধকারে আচ্ছন্ন হইল, পৃথিবী হইতে ধর্মের ধ্বজা একবারে নিশূল হইল। রাজার মৃত্যু সংবাদে রাজ্যের আবাল বৃদ্ধ বনিতা তাবৎ প্রজা হাহাকার শব্দে রোদন করিতে লাগিল। ব্রাহ্মণ পণ্ডিত, ভাট ভিখারীগণ উচ্চৈঃস্বরে রোদন করিতে করিতে কহিতে লাগিল, হায়, যিনি আমাদিগকে আদর পূর্ব্বক প্রতিপালন করিতেন, যিনি আমাদিগের পিতা স্বরূপ সকল বিপদেই রক্ষা করিতেন, তিনি পৃথিবীহইতে একবারে অন্তহিত হইলেন। রাণীগণ রাজার সহগামিনী হইলেন। দাস দাসীগণ, এবং আর আর কর্মকর ও সৈন্য সামন্ত সকলে অনাথ হইয়া বোদন করিতে লাগিল। এই প্রকারে রাজ্যের মধ্যে মহাশোকধ্বনি উপস্থিত হইল।

 অনন্তর রাজমন্ত্রী, রাজপুত্র জৈতপালকে রাজা করিয়া তাহার হস্তে সমস্ত রাজ্যের ভারার্পণ করিলেন। জৈতপাল রাজা হইয়া এক দিবস এই সিংহাসনে উপবেশন করিয়াছিলেন। উপবেশনমাত্র মূচ্ছাপন্ন ও জ্ঞানশূন্য হইলেন, এবং সেই মূচ্ছাবস্থাতেই স্বপ্ন দেখিলেন, রাজা বিক্রমাদিত্য তাহাকে বলিতেছেন, বৎস তুমি এক্ষণে এই সিংহাসনে উপবেশন করিও না, যদি কখন আমার সদৃশ সাহসী ও দাতা হইতে পার তবে এই সিংহাসনে বসিও। এইরূপ স্বপ্নে জৈতপালের জ্ঞানোদয় হইল। তখন তিনি সিংহাসন হইতে অবরোহণ করিয়া মন্ত্রীকে আদ্যোপান্ত স্বপ্নের সমস্ত বৃত্তান্ত