পাতা:বনবাণী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

বনবাণী

কালপুরুষের ইঙ্গিত যেন কাকে
দূর দিগন্তকোণে।


শ্রাবণে সঘন ধারা ঝরে ঝরঝর,
পাতায় পাতায় কেঁপে ওঠে থরথর—
মনে হয়, ওর হিয়া যেন ভরভর
বিশ্বের বেদনাতে।
কতবার ওর মর্মে গিয়েছি চলি,
বুঝিতে পেরেছি কেন উঠে চঞ্চলি
শরৎশিশিরে যখন সে ঝলমলি
শিহরায় পাতে পাতে।


ভুবনে ভুবনে যে প্রাণ সীমানাহারা
গগনে গগনে সিঞ্চিল গ্রহতারা
পল্লবপুটে ধরি লয় তারি ধারা,
মজ্জায় লহে ভরি।
কী নিবিড় যোগ এই বাতাসের সনে,
যেন সে পরশ পায় জননীর স্তনে,
সে পুলকখানি কত-যে সে মোর মনে
বুঝিব কেমন করি।


বাতাসে আকাশে আলোকের মাঝখানে
ঋতুর হাতের মায়ামন্ত্রের টানে
কী-যে বাণী আছে প্রাণে প্রাণে ওই জানে,
মন তা জানিবে কিসে।

৩৬