পাতা:বনবাণী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

বনবাণী

স্থকিত-পায়ের চলা দ্বিধাহত,
ভীরু নয়নের পল্লব নত,
না-বলা কথার আভাসের মতো
নীলাম্বরের প্রান্ত?
মনে পড়িছে কি কাঁখে তুলে ঝারি
তরুতলে-তলে ঢেলে চলে বারি,
সেচনশিথিল বাহু দুটি তারি
ব্যথায় আলসে ক্লান্ত।


ওগো সন্ন্যাসী, পথ যায় ভাসি
ঝরঝর ধারাজলে
তমালবনের শ্যামল তিমিরতলে।
দ্যুলোক ভূলোকে দূরে দূরে বলাবলি
চিরবিরহের কথা।
বিরহিণী তার নত আঁখি ছলছলি
নীপ-অঞ্জলি রচে বসি গৃহকোণে,
ঢেলে ঢেলে দেয় তোমারে স্মরিয়া মনে,
ঢেলে দেয় ব্যাকুলতা।
কভু বাতায়নে অকারণে বেলা বাহি
আতুর নয়নে দু হাতে আঁচল ঝাঁপে।
তুমি চিত্তের অন্তরে অবগাহি
খুঁজিয়া দেখিছ ধৈরজ নাহি নাহি,
মল্লার রাগে গর্জিয়া ওঠ গাহি,
বক্ষে তোমার অক্ষের মালা কঁপে।

৮৮