পাতা:বনে পাহাড়ে - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

St বনে-পাহাড়ে —হতে পারে, কিন্তু অন্য শ্রেণীর চাপা আপনারা যাকে ভেড়ালেণ্ডিয়া বলচেন ওই হোল স্বর্ণচাঁপা । এ গাছের পাতা আমাদের দেশের নোনাগাছের মত দেখতে-এ স্বৰ্ণাচাপা গাছ নয় কখনো । তবে এ চম্পক ফুল আমি কখনো দেখিনি, সে আমি স্বীকার করাচি । বড় বড় গাছ বেয়ে এক ধরণের লতা উঠেচে । ওরা বলেনবুনো মেটে আলু হয় এর তলায়। এদেশের হো-মেয়ের বন থেকে এগুলো সংগ্ৰহ করে নিয়ে যায় । ঘন অরণ্যশীর্ষে প্ৰভাতের সূৰ্য্যালোক, কচিৎ কোনো বনপুষ্প সুবাস, এ বড় বনানীর একটা গভীর রহস্যের ভাব আমার মনে এনে দিয়েচে ; ভুলতে পারাচিনে অরণ্য সমাকুল সিংহভূমের যে অংশে । বিচবণ করচি, এটি ব্যাস্ত্ৰ ও অন্যান্য শ্বাপদ আধুষিত এক মহাবান ; ঠিক সৌখীন কোনো পার্কে বেড়ানো নয় এটি-যে কোনো সময়ে মত্ত হস্তী যুথ বা মহাকায় ব্যান্ত্রের সামনে এসে পড়তে পারি, আমরা সম্পূর্ণ নিরস্ত্ৰ-ফরেষ্ট গার্ডের স্কন্ধস্থ কুড়ুল তখন কি কোনো কাজে আসবে ? হরদয়াল সিং বল্লেন-- এখান থেকে টাইগার হিলে যাবেন ? -সে কোথায় ? – মাইল পাঁচেক দূরে এই বনের নিবিড়তম অংশে। বিহারের গবর্ণর একবার কনজাৰভেটরকে কি বলেছিলেন-তোমাদের বনের খুব wild জায়গাটি একবার দেখতে চাই। তাই বনবিভাগ থেকে এই স্থানটি নির্বাচিত করা হয় । অবিশ্যি এর মধ্যে লাটসাহেবের সুখ সুবিধের দিকে কিছু দৃষ্টি রাখা হয়েছিল বই কি ! --কেমন জায়গাটি ? -খানিকটা পাহাড়ের উপর উঠতে হবে। একটা পাহাড়ের ওপরে সমতলভূমি টেবিলের মত। সেখান থেকে চারিদিকে চাইলে মনে হবে পৃথিবীতে ঘন বন ছাড়া আর বুঝি কিছু নেই। দৃশ্য বড় চমৎকার। সত্যিকার বনের সৌন্দৰ্য্য দেখবেন -- যাবার কোন আপত্তি ছিল না, কিন্তু পাঁচ মাইল কি যাওয়া যাবে 8