পাতা:বনে পাহাড়ে - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

so বনে-পাহাড়ে বুধনি কুই কিছু বুঝতে পারে না, শুধুই হাসে। এরা বাংলা তো দূরের কথা হিন্দিও বোঝে না বিহারে বাস ক’রে। কারণ এদের কাছে বাংলাও নেই বিহারও নেই-ওসব কথার কোন অর্থ নেই এদের কাছে। এই অরণ্যভূমি এদের মা, নিজের ক্ৰোড়ে আশৈশব এদের লালন পালন করেছে, ক্ষুধায় অন্ন তৃষ্ণায় জল জুগিয়ে। একেই (5 as হরদয়াল সিং হো-ভাষায় আবার আমার প্রশ্নটি ওদের করলেন । বুধনির উত্তর আমায় বুঝিয়ে দিলেন। বুধনি বল্লে-আমরা দল বেঁধে যাই, চার পাঁচজন এক সঙ্গে ! -বাঘ ভালুক দেখিস নে ? --মাঝে মাঝে দেখি বই কি । --ভয় করে না ? --ভয় করলে কি চলে আমাদের ! সঙ্গে তীর ধনুক থাকে। তবে বাঘ বেশি মানুষ দেখলে পালিয়ে যায়। হাতী বেশি খারাপ । হাতী তাড়া করে আসে --বাঘ কখনো তাড়া করে নি ? --না। বাবু, বাঘ কিছু বলে না। --আর কি জানোয়ার দেখেচিস ? --ভালুক আছে, ভালুকও বড় খারাপ। কখন যে ঘাড়ে এসে পড়বে কেউ বলতে পারে না । তা ছাড়া সাপ আছে। --কি সাপ ? -শঙ্খচূড় সাপ আছে, মানুষকে তেড়ে কামড়াবে। ময়াল সাপ আছে, খুব মোটা, সেও মানুষকে ধরে। আমরা ময়াল সাপের মাংস খাই, বেশ ভাল মাংস। সে বনানীর মধ্যে বসে বনের দুলালী মেয়েদের সঙ্গে বনের গল্প করতে আমাদের এত ভাল লাগছিলো যে কিছুতেই সেখান থেকে উঠতে ইচ্ছে করে না। ভাত হয়ে গেল, বড় বড় শাল পাতার পাত্রে ফোন শুদ্ধ ঢেলে বিনা মুণে বিনা তরকারীতে দিব্যি খেতে লাগিল ।