পাতা:বনে পাহাড়ে - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বনে-পাহাড়ে 8 R লড়াইয়ে-মোরগের ঝটপট দেখচে, টুপটাপ মহুয়া ফুল ঝরে পড়চে ওদের মাথায়-আশে পাশে, সামনে দূরে নীল নীল শৈলমালা জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ আনন্দ মুহুৰ্ত্ত । এদের সৌন্দৰ্য্যপ্রিয়তা ও আমোদপ্ৰিয়তা লক্ষ্য করবার বিষয় বটে। কি জানি হয়তো চক্ৰধরপুরের নিকটবৰ্ত্তী অরণ্যে শুঙ্গানপুরের গিরিগুহার চিত্রাবলী এদের পূর্বপুরুষেরা একেছিল কোন প্ৰাগৈতিহাসিক যুগে ! আমার স্ত্রী নারীসুলভ বস্তুপ্রিয়তা প্ৰদৰ্শন করে বল্লেন-একখানা নক্সা করা চাদর কিনবো।-- আমি চাদর ক্ৰয়ের বিরুদ্ধে বহু যুক্তি দেখালুম অবিশ্যি, কিন্তু কিছুই খাটলো না । আবার আমরা পথে বেরুই । এবার কি বেজায় ধুলো সুরু হোল ! ষ্টীয়ারিংয়ের তলাকার কোন ফাক দিয়ে ফোয়ারা থেকে জল বেরুবার মত ধূলো ঢুকতে লাগলো। আর একটা বন্য গ্রাম ও পথের পাশে তাদের মৃতদের উদ্দেশে প্রোথিত প্ৰস্তররাজি। এইগুলো যেখানেই দেখি, সেখানে প্রায়ই থাকে একটা প্ৰাচীন বট বা মহুল গাছ। পাহাড়ের পাশে যদি হয় মনে কেমন এক অদ্ভুত ছন্নছাড়া ভাব নিয়ে আসে। এমনি এক সমাধি স্থানের বর্ণনা করেছি আমার লেখা ‘আরণ্যক’-এ। সে স্থান গয়া জেলার প্রান্তে, দক্ষিণ বিহারের শৈলমালার নিবিড়তম অভ্যন্তরে অবস্থিত—অথচ আজ সেই সব দৃশ্যের কথাই আমার মনে আবার নিয়ে আসে এই বন্যগ্রাম ও এদের সমাধি প্ৰস্তরের চৌরস সারি। তিনটি বন্যগ্রাম পার হয়ে তবে চিটিমিটি ! গ্রামগুলির নাম ও ভৌগোলিক অবস্থান নিয়ে আমার স্ত্রী একটি ছড়া তৈরী করলেন আগে হোল পেটাপেটি বঁাকে, রুয়াউলি, করঞ্জলি তারপর চিন্টিমিটি