পাতা:বনে পাহাড়ে - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

८न-*८फु R ফুটে উঠে। অনেক বড়লোকের বাড়ী হয়তো কোনো এদে গলির মধ্যে এক ইটের স্তুপ মাত্র, দরজার এক পাশে দেখা যাবে ডাষ্ট্রবিন, গোটাকতক কাক আর খেকিকুকুর আশপাশে ঘুরে বেড়াচ্চে—এমন নীল বনানীর শোভা, এমন রক্তপলাশের উৎসব সেখানে কোথায় ? কোল-বোংসা গ্রাম ছেড়ে মহাদেবশাল বলে একটি পার্বত্য নদী নিবিড় বনের মধ্যে বড় বড় পাথরের ওপর দিয়ে কুলুকুলু শব্দ করে বয়ে চলেচে। নিভৃত ছায়াবিতান রচনা কবেচে সারান্দা অরণ্যপ্ৰান্ত । এখান থেকেই চড়াইয়ের পথে মোটর উঠতে লাগলো। পরীক্ষণেই কি নিবিড় বন সুরু হোল রাস্তার দুদিকে, কি দূর সমতলভূমির দৃশ্য ! "ওই দূরে মনোহরপুর ইষ্টিশান, ওই ট্রেনের ধোঁয়া উড়চে, ওই সেই কোল-বোংসা গ্রামে ছোট্ট পাহাড়ের ওপর গোসাইয়ের কুটীর ও | এক এক জায়গায় বনের গম্ভীর দৃশ্য মনে ভয়ের সঞ্চার করে, তবুও আমরা মোটরে চলেচি, সঙ্গে এতগুলো লোক। কিন্তু একটি অনভিজ্ঞ যুবক যেদিন এই বন্যজন্তু অধুষিত অরণ্যভূমির মধ্য দিয়ে এক সাইকেলে গিয়েছিল, তার সেদিনকার মনের অবস্থা বেশ বুঝতে •द्रिव्लभ । মিঃ সিংহ বল্লেন-এই সেই পথ, দাদা । --বেশ বুঝতে পারাচি। -এখনও কিছু দেখেন নি। আরও আগে চলুন। চৈতন্যদেবের সেই “এহ বাহ, আগে কহ আয়” ! বন কি নিবিড় হয়ে উঠচে, কাছির মত মোটা মোটা চীহড় লতা (Bonhinia Vallai) বিশাল বনস্পতির সঙ্গে জড়াজড়ি করে দুৰ্ভেদ্য ও অন্ধকার লতাকুঞ্জের সৃষ্টি করেচে, পদে পদে অত বেলাতেও সূৰ্য্যের আলো পড়েনি। একটা জায়গা দেখিয়ে মিঃ সিংহ বল্লেন - এখানে এসে এমন হতাশ হয়ে পড়েছিলাম যে ভাবলুম একটা উইল লিখি ও পকেটে একখানা পরিচয় রাখি ।