পাতা:বনে পাহাড়ে - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বনে-পাহাড়ে --তাই । উনিশ বছর পরে। -“দুরা যাত্র স্রোতঃ” কালিদাসের সেই শ্লোক জানেন তো ? নগরী হচে, বন, বন হচ্চে নগরী । কালিদাসের কালেও তা এমন ধারাই ঘটতো। আজ দেখাচেন পোংসায় বি, টি, টি কোম্পানীর আপিস, মিঃ লকনার তার বড় সাহেব। দু-দিন পরে সব জঙ্গল হয়ে যাবে, বুনো হাতীর ভয়ে দিনমানে মোটর চালানো দুষ্কর হবে । এইভাবে সেদিন আমি মিঃ সিংহের গল্পে বৰ্ণিত পথ নিজের চোখে দেখেছিলুম। কিন্তু আমি সারান্দা ফরেষ্টের গল্প বলতে বসিনি, বলছিলাম চিটিমিটি থেকে আমাদের চাইবাসা ফিরবার গল্প। সেই গল্পই আবার আরম্ভ করি । গাছতলা থেকে চা খেয়ে ও মিঃ সিংহের গল্প শুনে উঠে দেখি রাত অন্ধকার, গভীর অন্ধকার। বন্যহস্তীর ভয়ে সেই পাৰ্ব্বত্যপথে সাবধানে গাড়ী চালিয়ে আমরা বরকেলা শৈলমাল থেকে ধীরে ধীরে নেমে সমতলভূমির পথে নামলুম। সৈন্দবা কলি আমাদের ডানদিকে । এবার আর পথের ধারে গভীর খাদ নেই, সুতরাং নিরাপদ পথে দ্রুত ছুটিলো মোটর। মিঃ হরদয়াল সিং বল্লেন-ঐ সামনেই রাচি রোডএকটু পরেই আমরা পিচ-ঢালা চওড়া রাঁচি রোডে এসে উঠলাম। চল্লিশ মিনিটের মধ্যে রোরো নদীর সেতু পার হয়ে চাইবাস টাউনে প্ৰবেশ করলুম-রােত তখন দশট-এ কথা আগেই বলেছি। চাইবাসা ফিরে ঠিক করা গেল পরদিনই আমরা জয়ন্তগড় ও চম্পূয়া যাবে এবং বৈতরণী নদীর ধারে মাঠে ও বনে হবে আমাদের নিক'পিক ! প্ৰসঙ্গ ক্ৰমে বলা যেতে পারে যে, যে বনভোজনে বাড়ী থেকে তৈরী খাবার নিয়ে গিয়ে খাওয়া হয় তার নাম হোল নিক'পিক্‌--- আর যেখানে রান্না করে খাওয়া হয় সেটা পিকনিক। নিক'পিকের আয়োজন সম্পূর্ণ করলেন বীেমা, সুবোধের স্ত্রী। তার নিপুণ ও শিল্পীহস্তের তৈরী অনেক কিছু সুখাদ্য এলুমিনিয়ম সম্পূটকে ভৰ্ত্তি হোল, তবে চা নাকি তৈরী হবে বৈতরণী নদী-তীরের চমৎকার