পাতা:বনে পাহাড়ে - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

¢ ዓ বনে-পাহাড়ে মাঠে ও বনের ধারে-তাই চায়ের সাজসরঞ্জাম নেওয়া হোল अनgा । আমরা জন পাঁচেক একটা মোটরে । হাট-গামারিয়ার রাস্তায় মোটর হু হু চললো। দুধারে গ্ৰাণাইটের অনুচ্চ পাহাড়, চাইবাসার আশে পাশে দক্ষিণ ধলভূমের সর্বত্র এই ধরণের পাহাড় দেখতে পাওয়া যায়। দূর থেকে দেখে মনে হয় কালো পাথুরে কয়লার একটি স্তুপ। পাথরগুলোও অনেক জায়গাতেই আমনিতর ছোট ছোট ও আলগা । পাহাড়ের ওপর শিশুগাছ ( Dalbergia Sishu, ) অনেক দেখলুম। এ অঞ্চলে । শিশুগাছ সাধারণতঃ পাহাড়ে দেখা যায় না, বনে পাওয়াও কঠিন। বাংলা দেশে যা শিশুগাছ বলে চলে, তা হোল দক্ষিণ আমেরিকা থেকে আমদানি রেইন টি। অনেক জেলা-বোর্ডের পথের ধারে বাংলাদেশে এই জাতীয় গাছ যথেষ্ট দেখা যায়। মিঃ সিংহ বল্লেন-কাছেই একটা ভালো ঝর্ণা আছে । -কতদূর --রাস্তা থেকে এক মাইল । বনের মধ্যে । -এখন যাওয়া যাবে ? -ফিরবার পথে সুবিধা হবে, এখন থাক । এ পথে হাট-গামারিয়া একটি ভালো জায়গা । মহারাজ শ্ৰীশ নন্দীর চীনামাটির খনি আছে। এখানে। আর একটা আছে কিছুদূরে, সেটার মালিক জনৈক ধনী মাড়োয়ারী মহাজন। ধুধু মাঠ ও রুক্ষ গ্ৰাণাইট পাথরের অনুচ্চ টিলার মধ্যে ক্ষুদ্র একটা লোকালয়, বাজার, চায়ের দোকান, খোলার চালার দোকান-ঘর, একটি ডাকবাংলো-এই নিয়ে হাট-গামারিয়া । তারপর আবার চওড়া পিচ-ঢালা রাস্তা সীমাহীন অনুর্বর প্রান্তরের বুক চিরে সোজা চলেছে বহুদূরস্থ কেউনঝর-ষ্টেটের শৈলমালা ও অরণ্যানীর দিকে। মাঝে মাঝে ক্ষীণস্রোতা পাহাড়ী নদী বিরঝির করে বইছে। আর একটা কি গ্রােম পড়লো, শুনলুম অনেক সমৃদ্ধিশালী মুসলমানের বাস সে গ্রামে। একটা মসজিদও দেখা গেল। বন কোথাও নেই-দু একটা শাল মহুয়া গাছ মাঠের মাঝে মাঝে । tr