পাতা:বনে পাহাড়ে - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

दहन-१iश्ाgएछ و ছিলাম। তখন সৌন্দৰ্য্য দেখে ভুলে যাই যে অত জায়গায় বাড়ী করবার মত পয়সা নেই আমার হাতে । সেবার দাৰ্জিলিঙ গিয়ে ভাবলাম "ঘুমে একটা বাড়ী না করলে আর জীবনে ঘুম নেন্ট ! কিন্তু যখন জিজ্ঞেস করে জানা গেল অন্ততঃ ছয় হাজার টাকার কমে ঘুম সহরে বাড়ী হবার যে নেই-তখনই-শত হস্তেন বাজিনাম। ঝাড়গ্রামের আত্মীয়টির সঙ্গে দেখা হয়েছিল কলকাতায় । ব্লাকআউটের কলকাতায় বসে ক্ষণকালের জন্যে চোখের সামনে ভেসে উঠলো খানাকুই গ্রামের প্রান্তে সেই জ্যোৎস্নাত্মাত শালবন ও উদাস প্ৰান্তর, বনে, ঝোপে অজস্র ফোটা ল্যান্টানা ফুল, নানা রং-বেরংএর । এই ফুলটা ওখানকার জঙ্গলে যত দেখেছি। এত বাংলাদেশের এ অঞ্চলে কোথাও দেখিনি। তবে আজকাল কিছু কিছু আমদানি হয়েছে, বিশেষতঃ রেললাইনের ঢালুতে। রেললাইনের ঢালুতে অনেক বিদেশী ফুল দেখতে পাওয়া যায়। হয়তো রেলগাড়ীর সাহায্যে ঐ সব বীজ দেশবিদেশে কিভাবে ছড়িয়ে পড়ে -এ ছাড়া আর কি কারণ থাকতে পারে আমি জানিনে । জানুয়ারী মাস। আমি ঘাটশিলা আছি সে সময়। পাশের ষ্টেশন হোল গালুডি। কয়েকটি বন্ধু সেখানে ইংরিজি নববর্ষের উৎসব করবেন, আমাকে তঁরা নিমন্ত্রণ করেছেন । হেঁটেই রওনা হই । বেশি নয় ছ। মাইল রাস্তা। কিন্তু পথের দৃশ্য আমার কাছে বেশ ভালই লাগে। উচু রেলপথের বাঁধ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি, ডাইনে মাইল দুই আড়াই দূরে এবং বায়ে মাইল চারেক দূরে রেলপথের সঙ্গে সমান্তরাল শৈলমালা চলেছে বরাবর। ডাইনে সিদ্ধেশ্বর ডুরি শৈলমালা, বাঁদিকে কালাঝোড়। বেলা পড়ে এসেছে। একস্থানে রেলওয়ে কাটিং, অর্থাৎ সেখানে উচু ডাঙার কঠিন পাথরের মধ্যে দিয়ে রেললাইন কেটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বড় বড় চুণাপাথর ও বালিপাথরের চাই পড়ে আছে, খুব উঁচু পাথরের স্তুপ দেখাচ্ছে অনুচ্চ পাহাড়ের মত। একটু ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। জায়গাটাতে একটু বসে নিলাম।