পাতা:বন্দিনী রাজনন্দিনী.djvu/৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ 12 J কৃপা করিলে আমাদের পক্ষে ও এই অসাধ্যসাধন অসম্ভব হুইবে না। বিপদে ! পড়িয়া মনে হয় বটে—ভগবান আমাদিগকে ত্যাগ করিয়াছেন ; কিন্তু তিনি , আমাদিগকে মুহূর্তের জন্যও ত্যাগ করেন না। তিনি ত্যাগ করিলে আমরা কি এক দিনও জীবন-ভার বহন করিতে পারিতাম ? মৰ্ম্মান্তিক দুঃখ কষ্ট সহ করিতে পারিতাম ?—ভীষণ গ্রীষ্ম, যেন প্রলয়ানলে সমগ্র প্রকৃত দগ্ধ হইতেছে ; আকাশে যেন দ্বাদশ সুর্য্যের আবির্ভাব হইয়াছে ! বৃষ্টির অভাবে দরিদ্র কৃষিজীবীর কর্ষিত । ক্ষেত্রে বীজ বপনের সময় উত্তীর্ণ-প্রায় ; সে মরুবৎ শুষ্ক, উত্তপ্ত ক্ষেত্রের দিকে চাহিয়া হতাশ ভাবে অশ্রু বিসর্জন করিতেছে। নদীবক্ষ পঙ্কে পূর্ণ ; সরোবর, তড়াগ, পুষ্করিণী, কূপ জলহীন, শুদ্ধ ; গ্রাম্য বধূ শূন্য-কলস-কক্ষে, নিরাশা-কম্পিতবক্ষে সজল চক্ষে গৃহে ফিরিতেছে। ধুসর আকাশ মেঘ-সংস্পর্শহীন, গ্রামবাসীগণ দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করিয়া আৰ্ত্তনাদ করিতেছে, “কোথায় জল ! কোথায় জল !”—- কিন্তু আকাশে মেঘের চিহ্লমাত্র নাই ; বৃষ্টির সুদূর সম্ভাবনাও নাই। সকলেই মনে করিতেছে,—“বিধাতা বিমুখ হইয়াছেন, তিনি আমাদের পরিত্যাগ করিয়াছেন ; আর রক্ষা নাই ।” কিন্তু বিধাতার বিধান মানব বুদ্ধির অগোচর। হঠাৎ একরাত্রে গগনমণ্ডল গাঢ় কৃষ্ণবর্ণ জলদজালে সমাচ্ছন্ন হইয়া মুষলধারে বর্ষণ আরম্ভ হইল। ভগবান ‘ছাপ্পর ফাড়িয়া তৃষিতের আকাঙ্কণর ধন মুক্তহস্তে বিতরণ করিতে লাগিলেন । নদী, নালা, ডোবা, পুষ্করিণী জলে পরিপূর্ণ হইয়া উঠিল ; সকলেরই মুখে হাসি ফুটুল। সকলে বুঝিল বিধাতা তাহাদিগকে ত্যাগ করেন নাই, কখন তিনি ত্যাগ করেন না।—ভাগ্যদোষে আমরা দুঃখ কষ্ট ভোগ করিয়া তাহার উপর বিশ্বাস হারাই । “রহস্ত-লহরীর ভাগ্যেও এইরূপ ঘটিয়াছে —আমরা যখন বিপন্ন ও রহস্য-লহরীর জন্য প্রিটিং মেসিন ক্রয়ে হতাশ হইয় চতুদিক অন্ধকার দেখিতেছিলাম, সেই ছুদিনে “রহস্য-লহরীর কোন মহামুভব পৃষ্ঠপোষক, আমাদের দুদিনের বন্ধু, দেবচরিত্র লক্ষপতি ভূম্যধিকারী বহুমূল্যে একটি উৎকৃষ্ট (পেইনের) গ্রিন্টিং মেসিন ক্রয় করিয়া রহস্য-লহরী-প্রেসের জন্ত আমাদের হস্তে অর্পণ করিলেন । বিস্ময়ের