পাতা:বন-ফুল - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
বন-ফুল।

ছিঁড়ি ছিঁড়ি পাতাগুলি, মুখেতে দিতাম তুলি
তাকায়ে রহিত মোর মুখপানে হায়!
তাদের করিয়া ত্যাগ যাইব কোথায়?
যাইব স্বরগ ভূমে, আহা হা! ত্যজিয়া ঘুমে
এতক্ষণে উঠেছেন জননী আমার—
এতক্ষণে ফুল তুলি, গাঁথিছেন মালাগুলি
শিশিরে ভিজিয়া গেছে আঁচল তাহার—
সেথা ও হরিণ আছে, ফুল ফুটে গাছে গাছে
সেখানেও শুক পাখী ডাকে ধীরে ধীরে!
সেথাও কুটীর আছে, নদী বহে কাছে কাছে
পূর্ণ হয় সবোবর নির্ঝরের নীরে।
আইস! আইস দেব! যাই ধীরে ধীরে!
আয় পাখী! আয় আয়! কার তরে রবি হায়
উড়ে যা উড়ে যা পাখি! তরুর শাখায়!
প্রভাতে কাহারে পাখি! জাগাধিরে ডাকি ২
“কমলা।” “কমলা!” বলি মধুর ভাষায়?
ভুলেযা কমলানামে, চলে যা সুখের ধামে
‘কমলা!’ ‘কমলা!’ ব’লে ডাকিস‍্নে আর।
চলিনু তোদের ছেড়ে, যা শুক শাখায় উড়ে—
চলিনু ছাড়িয়া এই কুটীরের দ্বার।