পাতা:বরেন্দ্র রন্ধন.djvu/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চম অধ্যায়-চড়চড়ী।
৮৫

প্রয়োগ অপ্রশস্ত। কিন্তু দক্ষিণ বঙ্গে ‘ঝালে’ এবং কালিয়াতে’ (এবং বৈদেশিক ‘কারিতে’) ও সরিষা বাটা দেয়।

 চড়চড়ীর সহিত শুক্তানির সাদৃশ্য ঐ তেজপাত, মেথি, লঙ্কা ফোড়নে ও বাটা ঝাল বর্জ্জনে, কিন্তু পার্থক্য অতিরিক্ত সরিষা ফোড়নে কিন্তু তৎবাটা বর্জ্জনে। চড়চড়ীতে সরিষা সংযোগ একটি বিশেষত্ব কিন্তু সে সরিষা বাটা রূপে—কদাপি ফোড়ন রূপে নহে। আবার শুক্তানিতেও সরিষা সংযোগ একটি বিশেষত্ব, কিন্তু সে ফোড়ন রূপে—কদাপি বাটনা রূপে নহে। শুক্তানিতে তৎস্থলে পিঠালী, পোস্ত বা তিল-পিঠালী বাটা অথবা আদা বাটা (বা ছেঁচা) মধ্যে ক্ষেত্রানুসারে কোন একটি প্রযুক্ত। পক্ষান্তরে এ গুলি মধ্যে কোনটাই চড়চড়ীতে আদৌ মিশাইতে হইবে না। অপরন্তু শুক্তানিতে কাঁচা লঙ্কা অথবা পেঁয়াজ সংযোগ আদৌ করিবে না।

 মেথি ফোড়ন দ্বারা পক্ব ব্যঞ্জন মাত্রেই বাটা ঝাল (জিরামরিচ বাটা, ধনিয়া বাটা, তেজপাত বাটা) দেওয়া অপ্রশস্ত, কেবল তাহাতে কিছু শুক্না লঙ্কা বাটা দেওয়ায় বাধার কারণ নাই। সুতরাং চড়চড়ী বা শুক্তানিতে (অথবা ‘ছেঁচকীতে’ বা ‘ঝোলে’) আদৌ বাটা ঝাল দিবে না। শুক্না লঙ্কা বাটাও সচরাচর আমিষ ব্যঞ্জনে বিশেষতঃ মোটা মাছের ব্যঞ্জনে অল্প পরিমাণে দেয়।

 বিলাতী কুমড়া, গাভথোর এবং বোয়াল প্রভৃতি তৈলাক্ত মাছের চড়চড়ীতে ও অপরাপর ব্যঞ্জনেও বটে, দুটো কালজিরা অতিরিক্ত ফোড়ন দিবে। কাঁচা আম, আমড়া, তেঁতুল প্রভৃতি মিশাইয়া চড়চড়ী অম্লস্বাদবিশিষ্ট করা যাইতে পারে। আবার তিক্তস্বাদবিশিষ্ট চড়চড়ীও হইতে পারে।চড়চড়ীতে সচরাচর কোনও অনুষঙ্গ দেয় না।

 আর এক রকম চড়চড়ী আছে তাহাকে ‘ঝাল-চড়চড়ী’ কহে। তাহা নামে চড়চড়ী হইলেও এবং দেখিতেও কতকটা চড়চড়ীর মত হইলেও