পাতা:বরেন্দ্র রন্ধন.djvu/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৪
বরেন্দ্র রন্ধন

কাঁকরোল, ডুমুর, কচি ঝিঙ্গা, বেগুন, আলু প্রভৃতি আনাজ ইহাতে ব্যবহৃত হয়। তন্মধ্যে করিলার তুল্য একটা তিত আনাজ ইহাতে থাকা চাইই। করিলা না পাওয়া গেলে করিলা, হেলঞ্চা অথবা শশার পাতা কুচাইয়া ব্যবহার করিবে। আলু বেগুন ইহাতে অভাব পক্ষে দিবে; আলু বেগুন ইহার সহিত তেমন খাপ খায় না। গাভথোড় চাপড় ঘণ্টের একটি প্রধান আনাজ।

 উপরি লিখিত আনাজের মধ্যে ঋতু অনুসারে গুটি চারি পাঁচ লইয়া মিহি করিয়া কুটিয়া লও। মটর বা খেঁসারীর ডাইল বাটিয়া চাপড়ী ভাজিয়া রাখ। তেলে তেজপাতা, লঙ্কা, মেথি ও সরিষা ফোড়ন দিয়া আনাজ ছাড়। আংসাও। উত্তমরূপে আংসাইবে, তবে এই ব্যঞ্জনের স্বাদ উত্তম হইবে; নচেৎ ঘেৎঘেতে গোছ হইয়া যাইবে। তবে অবশ্য অতিরিক্ত আংসাইবে না। নুণ হলুদ দিয়া ক্রমে অল্পে অল্পে জল দিবে ও আংসাইবে। অবশেষে একটু বেশী জল দিবে। নাড়িয়া চাড়িয়া নসনসে করিয়া নামাও। আদা ছেঁচা ও একটু গাওয়া ঘি মিশাও। ইহাতে পিঠালী দিতে হইবে না।

 শুধু ডুমুর, কাঁকরোল বা পেঁপের করিলাপাতা যোগে অতি সুন্দর চাপড় ঘণ্ট হয়। পানসে স্বাদ বিশিষ্ট আনাজে চাপড় ঘণ্ট ভাল হয় না। ভোজন কালে খাঁটি সরিষার তৈল মিশাইয়া চাপড় ঘণ্ট খাওয়া অনেকে পছন্দ করেন।

১২৬। পল্‌তা নতীর ঝোল

 পল্‌তা নতী (ডগা), কচি আনাজি কলা, খোক্‌সা ডুমুর, কচি বেগুন, কচি গাভথোর ডুমা ডুমা করিয়া কুটিয়া লও। ঘৃতে তেজপাতা, এক আধটা লঙ্কা, দুটো মেথি ও দুটো সরিষা ফোড়ন দিয়া আনাজ ছাড়। আংসাও। নুন হলুদ দিয়া জল দাও। সিদ্ধ হইলে অল্প পিঠালী দিয়া ঝোল ঘন করিয়া নামাও। ঈষৎ গাওয়া ঘি মিশাও। অনেকে ইহাতে সরিষা ফোড়ন এবং পরে পিঠালী বাদ দিয়া থাকেন। ইহা রোগীর পথ্যরূপে ব্যবহৃত হয়।