পাতা:বরেন্দ্র রন্ধন.djvu/১২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠ অধ্যায়—শুক্তা।
১০৭

 বাউস, কাৎলা, সারঙ্গপুঁটি প্রভৃতির এই প্রকারে শুক্ত-ঝোল রাঁধিবে এবং ছোট ছোট কৈ, আইড় প্রভৃতিরও এই প্রকারে শুক্ত-ঝোল রাঁধা চলে।

১৩০। রুই (নহলা) মাছের শুক্ত

(মাছ ভাঙ্গিয়া)

 নোছি অপেক্ষা বড় অথচ পাকা মাছ অপেক্ষা ছোট এইরূপ নাতি ক্ষুদ্র রুই মাছকে বরেন্দ্রে ‘নহলা মাছ’ কহে। ইহার দ্বারাই উৎকৃষ্ট শুক্ত-ঝোল হয়। রোহিতের নহলা অথবা কালবাউস মাছেরই এই শুক্ত ভাল হয়। কাৎলা, মৃগেল প্রভৃতি মাছের শুক্তা তাদৃশ স্বাদু হয় না। পাকা রুই বা অতি ক্ষুদ্র রুই অর্থাৎ নোছি মাছের শুক্তাও সুবিধা মত হয় না।

 মাছ সাধারণ ভাবে কুটিয়া লও। নুণ হলুদ মাখ। করিলা ও পটোল ডুমা ডুমা করিয়া কুটিয়া লও। করিলা বা কোনও একটা তিত স্বাদবিশিষ্ট সবজী মাছ-শুক্তে দিতে পারিলেই ভাল হয়। এবং পটোল না পাওয়া গেলে আলু, আনাজি কলা, পেঁপে, কাঁকরোল, বেগুনের দ্বারাও কাজ চলিবে। এই মাছের সহিত পেঁপের শুক্তা ভালই হয়। আনাজ তেলে কষাইয়া রাখ। পরে তৈলে তেজপাত, লঙ্কা, মেথি ও সরিষা (আধ কচড়া গুঁড়া বা গোটা) অথবা ফুলকাসুন্দী ফোড়ন দিয়া মাছ ছাড়। আংসাও। অধিক আংসান কর্ত্তব্য নহে। নুণ হলুদ দিয়া জল দাও। ফুটিলে কষান আনাজ ছাড়। সিদ্ধ হইলে হাতা বা ছুরনী দিয়া মাছ ভাঙ্গিয়া দাও এবং নাড়িয়া সব মিশাইয়া দাও। অল্প ঝোল ঝোল থাকিতে নামাইয়া আদা ছেঁচা মিশাও। ইহাতে পিঠালী দিবে না।

 একটু ঝোল ঝোল রাখিয়া এই শুক্ত নামান হইয়া থাকে, তবে মাছ নরমগোছ থাকিলে উহা কিছু বেশী আংসাইয়া এবং পশ্চাৎ শুক্‌না শুক্‌না করিয়া রাঁধিয়া নামাইবে।