পাতা:বরেন্দ্র রন্ধন.djvu/১৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৬
বরেন্দ্র বন্ধন।

কাৎলার বাচ্ছা, কইর বাচ্ছা, খলিশা, ফল্লি, ছাতিয়ান, কাঁখলে, খরিয়া, রাইখরিয়া প্রভৃতি মাছের এই ঝোল রান্না হয়।

 ইহার মধ্যে এক বা একাধিক প্রকার মাছ লইয়া গোটা রাখিয়া অথবা বড় হইলে খণ্ড খণ্ড করিয়া কুটিয়া লও। নুণ হলুদ মাখ। তৈলে তেজপাতা, লঙ্কা, মেথি ফোড়ন দিয়া মাছ ছাড়। আংসাও। পুনরায় কিছু নুণ হলুদ দিয়া জল দাও। সিদ্ধ হইয়া অল্প ঝোল অবশিষ্ট থাকিতে নামাও। পিঠালী দিবে না। সিদ্ধ এতটা করিবে যাহাতে মৎস্যের ক্কাথ বাহির হইয়া আসিয়া ঝোলে সংক্রমিত হয়, তবে ঝোল সুস্বাদু হইবে।

 উত্তম গাওয়া ঘি ও নেবুর রস সংযোগে গরম ভাতের সহিত মাখিয়া এই ঝোল খাইতে ভাল।

১৩৮। রুই মাছের ভাঙ্গা

 উপরিলিখিত মাছের ঝোলে ব্যবহৃত ক্ষুদ্র নোছি মাছ অপেক্ষা যদ্যপি রুই প্রভৃতি মাছ বড় হয় অথচ ঠিক পাকা রুই মাছ বলিলে যাহা বুঝায় তত বড় না হয়, অর্থাৎ বরেন্দ্রে যাহাকে ‘নহলা মাছ’ কহে তাহার এবং কালবাউস মাছের ‘ভাঙ্গা’ অতি চমৎকার হয়। তৎব্যতীত আইড়, গুজা, ঢাঁই, বোয়াল প্রভৃতি মাছের শলুপ শাক যোগে অতি সুন্দর ভাঙ্গা হইয়া থাকে। ভাঙ্গায় মাছের সহিত পটোল, বেগুন, আলু প্রভৃতি আনাজ ব্যবহৃত হইয়া থাকে। পটোল ও কাঁটাল বীচি অথবা ডুমুরের সহিত ইলিশ মাছেরও অতি উপাদেয় ‘ভাঙ্গা’ রাঁধা যায়। ইলিশ মাছের ভাঙ্গায় একটু লঙ্কা বাটা দিতে হয়, কিন্তু শলুপ শাক দেয় না।

 রুই প্রভৃতি মাছের শুকৎ হইতে এই ভাঙ্গার পার্থক্য অতি সামান্য,—‘শুকতে’ সরিষা ফোড়ন দিতে হয় এবং পশ্চাতে নামাইয়া আদা ছেঁচা মিশাইতে হয়, ভাঙ্গাতে তাহা হয় না। তবে মাছ কিঞ্চিৎ নরম গোছ থাকিলে কেহ কেহ আদা ছেঁচা মিশান কর্ত্তব্য মনে করেন। শুকতের