পাতা:বরেন্দ্র রন্ধন.djvu/১৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫৮
বরেন্দ্র রন্ধন।

রাখ। ঘৃতে বা তৈলে জিরা, তেজপাত, লঙ্কা ও হিঙ ফোড়ন দিয়া আনাজ ছাড়। আংসাও। ঢাকিয়া দাও। নরম হইলে নুণ হলুদ দিয়া একটু চিনি ও তেঁতুল গোলা মিশাও। জল শুকাইয়া গেলে নামাও। ইচ্ছা হইলে উপরে কাটখোলায় ভাজা ঝালের গুঁড়া ছড়াইয়া দাও। একটু ঘি মিশাও।

 কেবলমাত্র বিলাতী কুমড়া অথবা তৎসহ আলু দ্বারা এই হিন্দুস্থানী ঝাল-লাফরা রাঁধা হতে পারে। তেঁতুল গোলার পরিবর্ত্তে আমের চুণা ব্যবহার করিতে পার।

 (খ) আলু বেগুণ, শিম ডুমা ডুমা করিয়া কুটিয়া লও। তেলে হিঙ, জিরা ও রাই-সরিষা ফোড়ণ দিয়া আনাজ ছাড়। আংসাও। নুণ হলুদ দিয়া সামান্য জল দাও বা জল না দিয়াই ঢাকিয়া দাও। আনাজ নরম হইয়া আসিলে গরম মশল্লা ও আমচুর দিয়া নাড়িয়া চাড়িয়া নামাও।

 এখানে বারানসের এই ‘গরমমশল্লা’ ও ‘আমচুর’ সম্বন্ধে কিছু বক্তব্য আছে। এই ‘গরমমশল্লা’তে বাঙ্গলা দেশের গরমমশল্লার ভাজা গুঁড়ার সহিত ভাজা ধনিয়া, জিরা-মরিচ, লঙ্কা প্রভৃতির গুঁড়া মিশাইয়া থাকে।—দারচিনি ১ তোেলা, লবঙ্গ ১ তোলা, জৈত্রী ১ তোলা, জায়ফল ১ তোলা, ধনিয়া ১ তোলা, সা-জিরা ১ তোলা, জিরা ১ তোলা, গোলমরিচ ১ তোলা, তেজ পাত ১/২ তোলা, শুক্না লঙ্কা ১ তোল, শুক্না নারিকেল ২তোলা, শ্বেত তিল ২ তোলা এবং শুপারীর ফুল ও কথের (খয়েবের) ফুল কিছু লইয়া কাটখোলায় বা তেলে ভাজিয়া সব একত্রে গুঁড়া করিয়া লও। কাশীতে ইহা বাজারে কিনিতে পাওয়া যায়। কাঁচা আম কাটিয়া শুকাইয়া ঢেঁকিতে কুটিয়া লইয়া তৎসহ মুলতানী হিঙ ৩ মাষা, পাঞ্জাবী লঙ্কা (শুক্না) ৴৵৹ আধ পোয়া, কালা-লবণ ৴৴৹ এক ছটাক ও সৈন্ধব লবণ ৴৴৹ এক ছটাক, এই সব মশল্লার গুঁড়া মিশাইয়া ছাঁকিয়া আমচুর করা হয়। কাশীর রাইসরিষাও বাঙ্গলা দেশের মত নহে, তাহা ক্ষুদ্র দানাবিশিষ্ট—অন্য প্রকারের।