পাতা:বরেন্দ্র রন্ধন.djvu/২০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
একাদশ অধ্যায়-কালিয়া।
১৮৩

আংসাও। ঢাকিয়া দেও। মাংসের নিজের জল মরিয়া গেলে এবং ভাজা মশল্লার বেশ সুগন্ধ বাহির হইলে গরম জল দেও। মাংস সিদ্ধ হইলে কষান আলু ছাড়। আবশ্যক হইলে আর একটু নুণ দাও। ঝোল আন্দাজ মত শুকাইলে জিরা-গোলমরিচ বাটা, তেজপাত বাটা, একটু চিনি (এবং পূর্ব্বে দধি না দিলে রুচী হইলে কিছু অম্লরস) মিশাও। প্রয়োজন বোধ করিলে কিঞ্চিৎ পিঠালী দিয়া ঝোল ঘন করিয়া নামাও। একটু ঘি, গরম মশল্লা বাটা (ও আদা বাটা, রশুন বাটা) মিশাও।

 কেহ কেহ পূর্ব্বেই জিরা, লঙ্কা প্রভৃতি ফোড়ন না দিয়া ঘৃতে প্রথমেই লঙ্কা বাটা, ধনিয়া বাটা ও আদা বাটা মাখান মাংস ছাড়িয়া কষাইয়া তৎপর নুণ হলুদ, দিয়া জল দেন। জল ফুটিলে কষান আলু ছাড়িয়া হাঁড়ির মুখ ঢাকিয়া দেন। মাংস সিদ্ধ হইলে নামাইয়া জিরা-গোলমরিচ বাটা, তেজপাত বাটা, চিনি ও পিঠালী মিশাইয়া থাকেন। পরে হাঁড়িতে ঘৃতে তেজপাত, লঙ্কা, জিরা ও রুচী অনুসারে হিঙ্ বা পেঁয়াজ কুচি ফোড়ন দিয়া ঐ রাঁধা মাংস সম্বারা দেন। অবশেষে নামাইয়া গরম মশলা বাটা ও রুচী হইলে রশুন বাটা মিশান।

 পাঁঠার খাশির, মেষের, সজারুর এবং খরগোসাদির মাংস এইরূপে রাঁধা যাইতে পারে। হরিণ মাংসও এইরূপে রাঁধিবে, কিন্তু তাহা অমনি ঝুলাইয়া রাখিয়া বাসী করিয়া অথবা কুটিয়া মশল্লাদি দ্বারা মাখিয়া চব্বিশ ঘণ্টা মত ঢাকিয়া রাখিয়া তবে রাঁধিতে হয়। ধান্যের ‘পোয়ালের’ সহিত একযোগে সিদ্ধ করিলে হরিণ মাংসের ভিতরের ‘মাটি’ দুর হইয়া বেশ কোমল হয়।

 পাঠক পাঠিকা লক্ষ্য করিবেন, মাংস রাঁধিবার কালে উহা যেমন লঙ্কা বাটা, ধনিয়া বাটা প্রভৃতি দ্বারা মাখিয়া লইয়া আংসাইতে পারা যায়, মৎস্য রাঁধিবার কালে তদ্রূপ করিতে পারা যায় না,মৎস্য কেবল মাত্র নুণ হলুদ যায় মাখিয়া কষাইতে হয়। ইহার কারণ, মাছে বাটনা মাখিয়া আংসাইতে