পাতা:বরেন্দ্র রন্ধন.djvu/২৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চতুর্দ্দশ অধ্যায়—আচার ও কাসুন্দি।
২৩৫

 সুতরাং সরিষার গুঁড়াই কাসুন্দির বিশেষত্ব। আচারেও সরিষার গুঁড়া ব্যবহৃত হয় কিন্তু সে গৌণভাবে। কাসুন্দিতে সরিষা গুঁড়ার সহিত ভাজা ‘ঝালের’ বা ‘সজের’ গুঁড়া প্রযুক্ত হয়, কিন্তু আচারে ঝালের গুঁড়ার বদলে কালজিরা এবং মৌরিই ব্যবহার্য্য এবং ক্ষেত্র বিশেষে তৎসহ আদা (এবং রশুন)ও মিশান হইয়া থাকে। আচারে কাঁচা লঙ্কা ব্যবহার্য্য, কাসুন্দিতে আদৌ তাহা হয় না,—(ভাজা) শুক্না লঙ্কাই ব্যবহার হইয়া থাকে। তৈলাদি পচন নিবারক পদার্থে ডুবাইয়া আচার রক্ষিত হয়, কাসুন্দির পচন নিবারক প্রণালী স্বতন্ত্র। কাসুন্দিতে জল উত্তমরূপে ফুটাইয়া জীবানু-শূন্য (Sterilized) করিয়া লইয়া তাহাতে সরিষার ও ‘বার-সজের’ গুঁড়া গুলি লওয়া হয়। তবে অবশ্য অনেক কাসুন্দি তৈলেই সংরক্ষিত হইয়া থাকে এবং প্রধান বা আম-কাসুন্দিও যখন পুরাতন হইতে থাকে তখন তাহাতে তৈল ঢালিয়া পচন হইতে রক্ষা করা হইয়া থাকে। তেঁতুল-কাসুন্দি ও মান-কাসুন্দিকে আবার তেঁতুল বা মানের আচারও বলা হইয়া থাকে। ফলতঃ এই সকল পার্থক্য ও সাদৃশ্য পর্যালোচনা করিলে কাসুন্দিকে ঝাল-আচার বলা যাইতে পারে।

২০৯। আম-কাসুন্দি

 গ্রীষ্মারম্ভে আম যখন কচি অবস্থায় থাকে শুভদিন দেখিয়া (শুক্লপক্ষে) তখন এই কাসুন্দি উঠান হইয়া থাকে। আমাদের বাটীতে বৈশাখমাসে অক্ষর তৃতীয়ার দিবস কাসুন্দি ‘উঠান’ আরম্ভ হইয়া থাকে। সকল গৃহে কাসুন্দি উঠান হয় না, যাহার গৃহে কাসুন্দি উঠান প্রথা আছে কেবল তাহার গৃহেই উঠান হইয়া থাকে। আবার কোন কোন গৃহে ইহা আংশিক ভাবে উঠান হইয়া থাকে। বিশেষ সুচীতা সহকারে ইহা অনুষ্ঠেয়। ইহার উপাদান ও পানি বিশেষভাবে নির্ম্মল হওয়া আবশ্যক এবং যে ঘরে ইহা রক্ষিত হইবে তাহাও