পাতা:বরেন্দ্র রন্ধন.djvu/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় অধ্যায়-ভাজি।
৩৯

উত্তমরূপ ফেনান না হইলেও ভাজিলে শিলা শিলা হইবে ও ভিতরে কঁচা থাকিয়া যাইবে। এই সময় আর এক বিষয়ে সতর্ক থাকিতে হইবে, যেন কোনও ক্রমে ডাইল বাটাতে তৈল সংস্পর্শ না ঘটে। তাহা হইলে কিছুতেই উহা আর ফেনান যাইবে না,—বাটা ছেকরা ছেকরা হইয়া এককালে সমস্ত নষ্ট হইয়া যাইবে।

 তৎপর, বেগুণ প্রভৃতি ভাজিবার দ্রব্য পাট পাট করিয়া কুটিয়া এই গোলায় চুবাইয়া তুলিয়া ভাসা তৈলে সোণার বর্ণে মুচমুচে করিয়া ভাজ। বেগুণাদি কুটা পাট পাট না হইলে তাহাতে গোলা লাগাইলে পিণ্ডাকৃত হইবে, সুতরাং ভাজিলে কদাপি মোচক হইবে না অথবা ভিতরের আনাজও সুপক্ব হইবে না। এই নিমিত্ত আনাজাদি সচরাচব পাৎলা পাট পাট করিয়া কুটিয়া লইয়া গোলায় ডুবাইয়া তুলিয়া ভাসা তৈলে ভাজা হয়, এই নিমিও ইহার নামও ‘পাট-ভাজি’ হইয়াছে।

 বেগুণ, বিলাতী কুমড়া, বিলাতী কুমড়ার ফুল, বক ফুল, কাঞ্চন ফুলের কলি, কচি পটোল, কচি গাব পাতা, কচি সেফালী পাতা, মেথি শাক, ফুলকোবি প্রভৃতি অপেক্ষাকৃত কোমল আনাজেব দ্বারাই ডাইলের পাটভাজা ভাল হয়। অপেক্ষাকৃত কঠিন আনাজ হইলে ভাজিলে ভিতরে কাঁচা থাকিয়া যাইবে। তবেই দেখা যাইতেছে আনাজাদি পাট পাট করিয়া বানাইয়া লওয়ার কতটা প্রয়োজন। অবশ্য মেথি শাক, বিলাতী কুমড়ার ফুল, কাঞ্চন ফুল প্রভৃতি পাট পাট করিয়া বানাইয়া না লইলেও তাহা গোলাতে ডুবাইলে ঠিক পিণ্ডাকৃতি হয় না—তাহা কতকটা ‘স্পঞ্জের’ মত ‘ফারফুর’ গোছের হয়, সুতরাং ভাজিলে উত্তপ্ত তৈল ঐ ফাঁকে ফাঁকে প্রবিষ্ট হইয়া সর্ব্বত্র সমভাবে ভাজা হয়। আনাজের মধ্যে বেগুণ সর্বাপেক্ষা কোমল এবং সুলভও বটে, সুতরাং তদ্দ্বারাই সাধারণতঃ পাটভাজা হয় বলিয়া ‘পাটভাজি’র অপর নাম ‘বেগুণী’ হইয়াছে।