পাতা:বহুবিবাহ.pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
বহুবিবাহ।

থাকে। এইরূপ তিন বিবাহ ও চারি বিবাহই এই বচনের উদ্দেশ্য। কেহ কেহ এই ব্যবস্থা করেন, যেখানে তিন স্ত্রী বর্ত্তমান আছে, সেই স্থলে এই বচন খাটিবেক।[১] যদি এই ব্যবস্থা আদরণীয় হয়, তাহা হইলে বর্ত্তমান তিন স্ত্রীর বিবাহ অধিবেদনের নির্দিষ্ট নিমিত্ত নিবন্ধন, আর চতুর্থ বিবাহ এতদচনোক্তদোষপরিহারস্বরূপ নিমিত্ত নিবন্ধন বলিতে হইবেক। অর্থাৎ, প্রথমতঃ স্ত্রীর বন্ধ্যাত্ব প্রভৃতি নিমিত্ত বশতঃ ক্রমে ক্রমে তিন বিবাহ ঘটিয়াছে; পরে, তিন স্ত্রী বিদ্যমান থাকিলে, এই বচনে যে চতুর্থ বিবাহের অবশ্যকর্ত্তব্য নির্দেশ আছে, তদনুসারে পুনরায় বিবাহ করা আবশ্যক হইতেছে। মনু- বচনে অধিবেদনের যে সমস্ত নিমিত্ত নির্দিষ্ট আছে, এতদ্বচনোক্তদোষ- পরিহার তদতিরিক্ত নিমিত্তান্তর বলিয়া পরিগণিত হইবেক। ফল কথা এই, যখন শাস্ত্রকারের কাম্যবিবাহস্থলে কেবল অসবর্ণা বিবাহের বিধি দিয়াছেন, যখন ঐ বিধি দ্বারা পূর্ব্বপরিণীতা স্ত্রীর জীবদ্দশায় যদৃচ্ছা- ক্রমে সবর্ণাবিবাহ করা সর্ব্বতোভাবে নিষিদ্ধ হইয়াছে, যখন উল্লিখিত বহুবিবাহ সকল অধিবেদনের নির্দিষ্ট নিমিত্তবশতঃ ঘটা সম্পূর্ণ সম্ভব হইতেছে, তখন যদৃচ্ছাক্রমে যত ইচ্ছা বিবাহ করা শাস্ত্রকারদিগের অনুমোদিত কার্য্য, ইহা কোনও মতে প্রতিপন্ন হইতে পারে না।

 কেহ কেহ কহিয়া থাকেন, যখন পুরাণে ও ইতিহাসে- কোনও কোনও রাজার যুগপৎ বহু স্ত্রী বিদ্যমান থাকার নিদর্শন পাওয়া যাইতেছে, তখন পুরুষের বহু বিবাহ শাস্ত্রানুমত কর্ম্ম নহে, ইহা কিরূপে অঙ্গীকৃত হইতে পারে। ইহা যথার্থ বটে, পূর্ব্বকালীন কোনও কোনও রাজার বহু বিবাহের পরিচয় পাওয়া যায়; কিন্তু, সে সকল বিবাহ যদৃচ্ছাপ্রবৃত্ত বিবাহ নহে। রামায়ণে উল্লিখিত আছে, রাজা দশরথের অনেক মহিলা ছিল। কিন্তু তিনি যে যদৃচ্ছাক্রমে সেই সমস্ত


  1. এতদ্ববচনং বর্তমানস্মীত্রিকপরমিতি বদন্তি। উদ্বাহতত্ত্ব।