পাতা:বহুবিবাহ.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
বহুবিবাহ।

তন্নিবারণই কৌলীন্যমর্য্যাদাপনের মুখ্য উদ্দেশ্য। রাজা বলসেন বিবেচনা করিলেন, আচার, বিনয়, বিদ্যা প্রভৃতি সদ্গুণের সবিশেষ পুরষ্কার করিলে, ব্রাহ্মণেরা অবশ্যই সেই সকল গুণের রক্ষাবিষয়ে সবিশেষ যত্ন করিবেন। তদনুসারে, তিনি পরীক্ষা দ্বারা যাঁহাদিগকে নবগুণবিশিষ্ট দেখিলেন, তাঁহাদিগকে কৌলীন্যমর্যাাদা প্রদান করিলেন। কৌলীন্যপ্রবর্ত্তক নয় গুণ এই,—আচার, বিনয়, বিদ্যা, প্রতিষ্ঠা, তীর্থ- দর্শন, নিষ্ঠা, আবৃত্তি, তপস্যা, দান[১]। আবৃত্তিশব্দের অর্থ পরিবর্ত্ত; পরিবর্ত্ত চারিপ্রকার, আদান, প্রদান, কুশত্যাগ ও ঘটকার্যে প্রতিজ্ঞা[২]। আদান, অর্থাৎ সমান বা উৎকৃষ্ট গৃহ হইতে কন্যা গ্রহণ; প্রদান, অর্থাৎ সমান অথবা উৎকৃষ্ট গৃহে কন্যাদান; কুশত্যাগ, অর্থাৎ কন্যার অভাবে কুশময়ী কন্যার দান; ঘটকাগ্রে প্রতিজ্ঞা, অর্থাৎ উভয় পক্ষে কন্যার অভাব ঘটিলে, ঘটকের সম্মুখে বাক্যমাত্র দ্বারা পরস্পর কন্যাদান। সৎকুলে কন্যাদান ও সৎকুল হইতে কন্যাগ্রহণ কুলের প্রধান লক্ষণ; কিন্তু কন্যার অভাব ঘটিলে, আদান প্রদান সম্পন্ন হয় না; সুতরাং কন্যাহীন ব্যক্তি সম্পূর্ণ কুললক্ষণাক্রান্ত হইতে পারেন না। এই দোষের পরিহারার্থে কুশময়ী কন্যার দান ও ঘটকসমক্ষে বাক্যমাত্র দ্বারা পরস্পর কন্যাদানের ব্যবস্থা হয়।

 পূর্ব্বে উল্লিখিত হইয়াছে, কান্যকুব্জাগত পঞ্চ ব্রাহ্মণের ষট্প‌ঞ্চাশৎ সন্তান এক এক গ্রামে বাস করেন; সেই সেই গ্রামের নামানুসারে, এক এক গাঁই হয়; তাঁহাদের সন্তানপরম্পরা সেই সেই গাঁই বলিয়া


  1. আচারো বিনয়ো বিদ্যা প্রতিষ্ঠা তীর্থদর্শনম্।
    নিষ্ঠাবৃত্তিন্তপো দানং নবধা কুললক্ষণম্॥

    এরূপ প্রবাদ আছে, পুর্ব্বে নিষ্ঠা শান্তিস্তপো দানম্ এইরূপ পাঠ ছিল; পরে, বল্লালকালীন ঘটকেরা শান্তিশব্দস্থলে আবৃত্তিশব্দ নিবেশিত করিয়াছেন।

  2. আদানঞ্চ প্রদানঞ্চ কুশত্যাগস্তথৈব চ।
    প্রতিজ্ঞা ঘটকাগ্রেষু পরিবর্ত্তশ্চতুর্বিধঃ॥