পাতা:বহুবিবাহ.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।

দুর্ভাগ্যক্রমে, মাতুলদের অবস্থা ক্ষুন্ন হওয়াতে, তাঁহারা ভাগিনেয়ীদের বিবাহকার্য্য নির্ব্বাহ করিতে পারেন নাই। প্রথম কন্যার বয়ঃক্রম ১৮। ১৯ বৎসর, দ্বিতীয়টির বয়ঃক্রম ১৫|১৬ বৎসর, এই সময়ে কোনও ব্যক্তি ভুলাইয়া তাহাদিগকে বাট হইতে বাহির করিয়া লইয়া যায়।

 প্রায় এক পক্ষ অতীত হইলে, তাহাদের পিতা এই দুর্ঘটনার সংবাদ পাইলেন, এবং কিঙ্কর্ত্তব্যবিমূঢ় হইয়া, এক আত্মীয়ের সহিত পরামর্শ করিবার নিমিত্ত, কলিকাতায় আগমন করিলেন। আত্মীয়ের নিকট এই দুর্ঘটনায় বৃত্তান্ত বর্ণন করিয়া, তিনি গলদশ্রু লোচনে আকুল বচনে কহিতে লাগিলেন, ভাই এত কালের পর আমায় কুললক্ষী পরিত্যাগ করিলেন; আর আমার জীবনধারণ বৃথা; আমি অতি হতভাগ্য, নতুবা কুললক্ষী বাম হইবেন কেন। আত্মীয় কহিলেন, তুমি যে কখনও কন্যাদের কোনও সংবাদ লও নাই, এ তোমার সেই পাপের প্রতিফল। যাহা হউক, কুলীন ঠাকুর, অনেক ভাবিয়া চিন্তিয়া, অবশেষে কন্যা- পহারীর শরণাগত হইলেন এবং প্রার্থনা করিলেন, আপনি দয়া করিয়া তিন মাসের জন্য কন্যা দুটি দেন, আমি তিন মাস পরে উহাদিগকে আপনার নিকট পঁহুছাইয়া দিব। কন্যাপহারী যাঁহাদের অনুরোধ রক্ষা করেন, এরূপ অনেক ব্যক্তি, কুলীনঠাকুরের কাতরতা দর্শনে ও আর্ত্তবাক্য শ্রবণে অনুকম্পাপরতন্ত্র হইয়া, অনেক অনুরোধ করিয়া, তিন মাসের জন্য, সেই দুই কন্যাকে পিতৃহস্তে সমর্পণ করাইলেন। তিনি, চরিতার্থ হইয়া, তাদের দুই ভাগনীকে আপন বসতিস্থানে লইয়া গেলেন, এবং এক ব্যক্তি, অঘরে বিবাহ দিবার জন্য, চুরী করিয়া লইয়া গিয়াছিল; অনেক যত্নে, অনেক কৌশলে, ইহাদের উদ্ধার করিয়াছি, ইহা প্রচার করিয়া দিলেন। কন্যাৱা না পলায়ন করিতে পারে, এজন্য, এক রক্ষক নিযুক্ত করিলেন। সে সর্ব্বক্ষণ তাহাদের রক্ষণাবেক্ষণ করিতে লাগিল।

 এইরূপ ব্যবস্থা করিয়া, কুলীনঠাকুর অর্থের সংগ্রহ ও বরের অন্বেষণ