পাতা:বহুবিবাহ.pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
বহুবিবাহ।

করিবার নিমিত্ত নির্গত হইলেন এবং এক মাস পরে, ভাদ্রমাসের শেষে, বিবাহোপযোগী অর্থ সংগ্রহপূর্ব্বক এক ষষ্টিবর্ষীয় বর সমভিব্যাহারে বাটীতে প্রত্যাগমন করিলেন। বর কন্যাদের চরিত্রবিষয়ে কিঞ্চিৎ জানিতে পারিয়াছিলেন; এজন্য, নিয়মিত অপেক্ষা অধিক দক্ষিণা না পাইয়া, কুলীনঠাকুরের কুলরক্ষা করিতে সম্মত হইলেন না। পর রাত্রিতেই সম্প্রদানক্রিয়া সম্পন্ন হইয়া গেল। কুলীনঠাকুরের কুলরক্ষা হইল। যাঁহাৱা বিবাহক্ষেত্রে উপস্থিত ছিলেন, স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করিয়াছেন, কুললক্ষী বিচলিত হইলেন না, এই আহ্লাদে ব্রাহ্মণের নয়নযুগলে অশ্রুধারা বহিতে লাগিল।

 পর দিন প্রভাত হইবামাত্র, বর স্বস্থানে প্রস্থান করিলেন। কতিপয় দিবস অতীত হইলে, বিবাহিতা কুলবালারাও অন্তর্হিতা হইলেন। তদবধি আর কেহ তাঁহাদের কোনও সংবাদ লয় নাই; এবং, সংবাদ লইবার আবশ্যকতাও ছিল না। তাঁহারা পিতার কুলরক্ষা করিয়াছেন। অতঃপর যথেচ্ছাচারিণী হইলে, পিতার কুলোচ্ছেদের আশঙ্কা নাই। বিশেষতঃ, তিনি কন্যাপহারীর নিকট অঙ্গীকার করিয়াছিলেন, তিন মাস পরে কন্যাদিগকে তাঁহার নিকট পঁহুছাইয়া দিবেন। বিবাহের অব্যবহিত পরেই, প্রতিশ্রুত সময় উত্তীর্ণ হইয়া যায়। সে যাহা হউক, কুলীনঠাকুর কুললক্ষীর স্নেহ ও দয়ায় বঞ্চিত হইলেন না, ইহাই পরম সৌভাগ্যের বিষয়। চঞ্চলা বলিয়া লক্ষীর বিলক্ষণ অপবাদ আছে। কিন্তু কুলীনের কুললক্ষী সে অপবাদের আস্পদ নহেন।

 অনেকেই এই ঘটনার সবিশেষ বিবরণ অবগত হইয়াছিলেন, কিন্তু, তজ্জন্য, কে কুলীনঠাকুরের প্রতি অশ্রদ্ধা বা অনাদর প্রদর্শন করেন নাই।