পাতা:বহুবিবাহ.pdf/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
বহুবিবাহ।

প্রস্তুত আছেন। এই সুযোেগ দেখিয়া, বংশজেরা, কিঞ্চিৎ কিঞ্চিৎ দিয়া সন্তুষ্ট করিয়া, স্বকৃতভঙ্গকে কন্যাদান করিতে আরম্ভ করেন। বিবাহিতা স্ত্রীর কোনও ভার লইতে হইবেক না, অথচ আপাততঃ কিঞ্চিৎ লাভ হইতেছে, এই ভাবিয়া স্বকৃতভঙ্গেরাও বংশজদিগকে উদ্ধার করিতে বিমুখ হয়েন না; এইরূপে, কিঞ্চিৎ লাভলোভে, বংশজকন্যাবিবাহকরা স্বকৃতভঙ্গের প্রকৃত ব্যবসায় হইয়া উঠে।

 এতদ্ভিন্ন, ভঙ্গকুলীনদের মধ্যে এই নিয়ম হইয়াছে, অন্ততঃ স্বসমান পর্য্যায়ের ব্যক্তিদিগকে কন্যাদান করিতে হইবেক, অর্থাৎ স্বকৃতভঙ্গের কন্যা স্বকৃতপাত্রে দানকরা আবশ্যক। তদনুসারে, যে সকল স্বকৃতভঙ্গের অবিবাহিতা কন্যা থাকে, তাঁহারাও কিঞ্চিৎ কিঞ্চিৎ দিয়া সন্তুষ্ট করিয়া, স্বকৃতভঙ্গকে কন্যাদান করেন। স্বকৃতভঙ্গের পুত্র, পৌত্র প্রভৃতির পক্ষেও স্বকৃতভঙ্গ পাত্রে কন্যাদান করা শ্লাঘার বিষয়; এজন্য তাঁহারাও, সবিশেষ যত্ন করিয়া, স্বকৃতভঙ্গ পাত্রে কন্যাদান করিয়া থাকেন।

 স্বকৃতভঙ্গ কুলীন এইরূপে ক্রমে ক্রমে অনেক বিবাহ করেন। স্বকৃতভঙ্গেয় পুত্রেরা এ বিষয়ে স্বকৃতভঙ্গ অপেক্ষা নিতান্ত নিকৃষ্ট নহেন। তৃতীয় পুৰুষ অবধি বিবাহের সংখ্যা ন্যূন হইতে আরম্ভ হয়। পূর্ব্বে, বংশজকন্যা গ্রহণ করিলে, কুলীন এককালে কুলভ্রষ্ট ও বংশজভাবাপন্ন হইয়া, হেয় ও শ্রদ্ধেয় হইতেন; ইদানীং, পাঁচপুরুষ পর্য্যন্ত, কুলীন বলিয়া গণ্য ও মান্য হইয়া থাকেন।

 যে সকল হতভাগা কন্যা স্বকৃতভঙ্গ অথবা দুপুরুষিয়া পাত্রে অর্পিতা হয়েন, তাঁহারা যাবজ্জীবন পিত্রালয়ে বাস করেন। বিবাহকর্ত্তা মহাপুরুষেরা, কিঞ্চিৎ দক্ষিণা পাইয়া, কন্যাকর্ত্তার কুলরক্ষা অথবা বংশের গৌরববৃদ্ধি করেন, এইমাত্র। সিদ্ধান্ত করা আছে, বিবাহ- কর্ত্তাকে বিবাহিতা স্ত্রীর তত্ত্বাবধানের, অথবা ভরণপোষণের, ভারবহন করিতে হইবেক না। সুতরাং কুলীনমহিলারা, নামমাত্রে বিবাহিতা