পাতা:বহুবিবাহ.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।

স্থল নাই। তাঁহারাই তাঁহাদের একমাত্র উপমাস্থল। —কোনও অতি- প্রধান ভঙ্গকুলীনকে কেহ জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন, ঠাকুরদাদা মহাশয়! আপনি অনেক বিবাহ করিয়াছেন, সকল স্থানে যাওয়া হয় কি। তিনি অম্লানমুখে উত্তর করিলেন, যেখানে ভিজিট[১] পাই, সেই খানে যাই। —গত দুর্ভিক্ষের সময়, এক জন ভঙ্গকুলীন অনেকগুলি বিবাহ করেন। তিনি লোকের নিকট আস্ফালন করিয়াছিলেন, এই দুর্ভিক্ষে কত লোক অন্নাভাবে মারা পড়িয়াছে, কিন্তু আমি কিছুই টের পাই নাই; বিবাহ করিয়া সচ্ছন্দে দিনপাত করিয়াছি। —গ্রামে বারোয়ারিপূজার উদ্যোগ হইতেছে। পূজার উদ্যোগীরা, ঐ বিষয়ে চাঁঁদা দিবার জন্য, কোনও ভঙ্গকুলীনকে পীড়াপীড়ি করাতে, তিনি, চাঁদার টাকা সংগ্রহের জন্য, একটি বিবাহ করিলেন। —বিবাহিত স্ত্রী স্বামীর সমস্ত পরিবারের ভরণপোষণের উপযুক্ত অর্থ লইয়া গেলে, কোন ভঙ্গকুলীন, দয়া করিয়া, তাহাকে আপন আবাসে অবস্থিতি করিতে অনুমতি প্রদান করেন কিন্তু সেই অর্থ নিঃশেষ হইলেই, তাহাকে বাটী হইতে বহিস্কৃত করিয়া দেন। —পুত্রবধূর ঋতুদর্শন হইয়াছে। সে যাঁহার কন্যা, তাঁহার নিতান্ত ইচ্ছা, জামাতাকে আনাইয়া, কন্যর পুনর্বিবাহসংস্কার নির্ব্বাহ করেন। পত্র দ্বারা বৈবাহিককে আপন প্রার্থনা জানাইলেন। বৈবাহিক পত্রোত্তৱে অধিক টাকার দাওয়া করিলেন। কন্যার পিতা তত টাকা দিতে অনিচ্ছু বা অসমর্থ হওয়াতে, তিনি পুত্রকে শ্বশুরালয়ে খাইতে দিলেন না; সুতরাং, পুত্রবধূর পুনর্বিবাহসংস্কার এ জন্মের মত স্থগিত রহিল। —বহুকাল স্বামীর মুখ দেখেন নাই; তথাপি কোনও ভঙ্গকুলীনের ভার্য্যা ভাগ্যক্রমে গর্ভবতী হইয়াছিলেন। ব্যভিচারিণী কন্যাকে গৃহে রাখিলে, জ্ঞাতিবর্গের নিকট অপদস্থ ও সমাজচ্যুত


  1. ডাক্তারেরা চিকিৎসা করিতে গেলে, তাঁহাদিগকে যাহা দিতে হত, এ দেশের সাধারণ লোকে তাকে ভিজিট্ (Visit} রলে।