পাতা:বহুবিবাহ.pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৪
বহুবিবাহ।

হইলে, জাতিপাত ও ধর্ম্মলোপ হয় না; কিন্তু, তাদৃশ আদানপ্রদান কারীদিগকে কায়স্থসমাজে কিছু হেয় হইতে হয়। ৬০।৭০ বৎসর পূর্ব্বে, মৌলিকে মৌলিকে বিবাহ নিতান্ত বিরল ছিল না, এবং নিতান্ত দোষাবহ বলিয়াও পরিগৃহীত হইত না।

 মৌলিকেরা কুলীনের দ্বিতীয় পুত্র প্রভৃতিকে কন্যাদান করিয়া থাকেন। কিন্তু, কতিপয় মৌলিকপরিবারের সঙ্কল্প এই, কুলীনের জ্যেষ্ঠ পুত্রকে কন্যাদান করিডে হইবেক। কুলীনের জ্যেষ্ঠ পুত্র প্রথমে মৌলিককন্যা বিবাহ করিতে পারেন না। কুলীনকন্যা বিবাহ দ্বারা যাঁহার কুলরক্ষা হইয়াছে, মৌলিক কায়স্থ, অনেক যত্ন ও অর্থব্যয় করিয়া তাঁহাকে কন্যা দান করেন। কুলীনের জ্যেষ্ঠ পুত্র এইরূপে মৌলিকগৃহে যে দ্বিতীয় সংসার করেন, তাহার নাম আদ্যরস; আর, যে সকল মৌলিকের গৃহে এইরূপ বিবাহ হয়, তাহাদিগকে আদ্যরসের ঘর বলে।

 মৌলিকেরা, আদ্যরস করিয়া, অনেক যত্নে জামাতাকে গৃহে রাখেন। তাহার কারণ এই বোধ হয়, কুলীনের জ্যেষ্ঠ সন্তান পিতৃমর্য্যাদা প্রাপ্ত হন। আদ্যরসপ্রিয় মৌলিকদিগের উদ্দেশ্য এই, তাঁহাদের দৌহিত্র সেই মর্য্যাদার ভাজন হইবেন। কিন্তু, যে ব্যক্তির দুই সংসার, তাহার কোন্ স্ত্রী প্রথম পুত্রবতী হইবেক, তাহার স্থিরতা নাই। পূর্ব্ব- পরিণীতা কুলীনকন্যার অগ্রে পুত্র জম্মিলে, আদ্যরসের উদ্দেশ্য বিফল হইয়া যায়। জামাতাকে পুর্ব্বপরিণীতা কুলীনকন্যার নিকটে যাইতে দেওয়া, সেই উদ্দেশ্যসাধনের প্রধান উপায়। এজন্য, জামাতাকে সন্তুষ্ট করিয়া গৃহে রাখা নিতান্ত আবশ্যক হইয়া উঠে। তাদৃশ স্থলে, পূর্ব্বপরিণীতা কুলীনকন্যা স্বামীর মুখ দেখিতে পান না। বস্তুতঃ, তাদৃশী কুলীনকন্যাকে, নামমাত্রে বিবাহিতা হইয়া, বিধবা কন্যার ন্যায়, পিত্রালয়ে কালযাপন করিতে হয়। কুলীন জামাতাকে বশে রাখা বিলক্ষণ ব্যয়সাধ্য; এজন্য, যে সকল আদ্যরসকারী মৌলিকের অবস্থা