পাতা:বহুবিবাহ.pdf/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।
৬৯

কার্য্য, সে বিষয়ে গবর্ণমেণ্টকে হস্তক্ষেপ করইতে দেওয়া বিধেয় নহে। কিন্তু, সমাজের দোষসংশোধন কিরূপ কার্য্য, এবং কিরূপ সমাজের লোক, অন্যদীয় সাহায্য নিরপেক্ষ হইয়া, সমাজের দোষসংশোধনে সমর্থ, যাঁহাদের সে বোধ ও সে বিবেচনা আছে, তাঁহারা, এ দেশের অবস্থা দেখিয়া, কখনই সাহস করিয়া বলিতে পারেন না, আমরা কোনও কালে, কেবল আত্মযত্নে ও আত্মচেষ্টায়, সামাজিক দোষ- সংশোধনে কৃতকার্য্য হইতে পারি। আমরা অত্যন্ত কাপুরুষ, অত্যন্ত অপদার্থ; আমাদের হতভাগা সমাজ অতিকুৎসিত দোষপরম্পরায় অত্যন্ত পরিপূর্ণ। এ দিকের চন্দ্র ও দিকে গেলেও, এরূপ লোকের ক্ষমতায় এরূপ সমাজের দোসংশোধন সম্পন্ন হইবার নহে। উল্লিখিত নব্য প্রামাণিকেরা কথায় বিলক্ষণ প্রবীণ; তাঁহাদের যেরূপ বুদ্ধি, যেরূপ বিদ্যা, যেরূপ ক্ষমতা, তদপেক্ষা অনেক অধিক উচ্চ কথা কহিয়া থাকেন। কথা বলা যত সহজ, কার্য্য করা তত সহজ নহে।

 আমাদের সামাজিক দোষসংশোধনে প্রবৃত্তি ও ক্ষমতা বিষয়ে দুটি উদাহরণ প্রদর্শিত হইতেছে; প্রথম, ব্রাহ্মণজাতির কন্যাবিক্রয়; দ্বিতীয়, কায়স্থজাতির পুত্রবিক্রয়। ব্রাহ্মণজাতির অধিকাংশ শ্রোত্রিয় ও অনেক বংশজ কন্যাবিক্রয় করেন; আর, সমুদায় শ্রোত্রিয় ও অধিকাংশ বংশজ কন্যাক্রয় করিয়া বিবাহ করেন। এই ক্রয়বিক্রয় শাস্ত্রানুসারে অতি গর্হিত কর্ম্ম; এবং প্রকারান্তরে বিবেচনা করিয়া দেখিলে, অতি জঘন্য ব্যবহার। অত্রি কহিয়াছেন,

ক্রয়ক্রীতা চ যা কন্যা পত্নী সা ন বিধীয়তে।
তস্যাং জাতাঃ সুতান্তেষাং পিতৃপিণ্ডং ন বিদ্যতে।[১]

ক্রয় করিয়া যে কন্যাকে বিবাহ করে, সে পত্নী নহে; তাহার গর্ভে যে সকল পুত্র জন্মে, তাহারা পিতার পিণ্ডদানে অধিকারী নয়।

  1. অত্রিসংহিতা।