পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/১০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।
৯৭

প্রতীয়মান হইতেছে, গৃহস্থাশ্রমের উদ্দেশ্য সাধনের নিমিত্ত, গৃহস্থ ব্যক্তির পক্ষে দারপরিগ্রহ নিতান্ত আবশ্যক। মনু কহিয়াছেন,


 অপত্যং ধর্ম্মকার্য্যাণি শুশ্রূষা রতিরুত্তমা।

 দারাধীনস্তথা স্বর্গঃ পিতৃণামাত্মনশ্চ হ॥৯।২৮।(৯)[১]

  পুত্রোৎপাদন, ধর্ম্মকার্য্যের অনুষ্ঠান, শুশ্রূষা, উত্তম রতি এবং পিতৃলোকের ও আপনার স্বর্গলাভ এই সমস্ত স্ত্রীর অধীন।

প্রথমবিবাহিতা স্ত্রীর দ্বারা এই সকল সম্পন্ন হইলে, তাহার জীবদ্দশায় পুনরায় বিবাহ করা শাস্ত্রকারদিগের অভিমত নহে। এজন্য, আপস্তম্ব তাদৃশ স্থলে স্পষ্ট বাক্যে বিবাহের নিষেধ করিয়া গিয়াছেন। স্ত্রীর বন্ধ্যাত্ব প্রভৃতি দোষবশতঃ পুত্রোৎপাদনের অথবা ধর্ম্মকার্য্যানুষ্ঠানের ব্যাঘাত ঘটিলে, শাস্ত্রকারেরা তাদৃশ স্ত্রীর জীবদ্দশায় পুনরায় দারপরিগ্রহের বিধি দিয়াছেন। পুত্রোৎপাদনের নিমিত্ত, যত বার আবশ্যক, বিবাহ করিবেক; অর্থাৎ প্রথমপরিণীতা স্ত্রী পুত্রবতী না হইলে, তৎসত্ত্বে বিবাহ করিবেক; এবং দ্বিতীয়পরিণীতা স্ত্রী পুত্রবতী না হইলে, পুনরায় বিবাহ করিবেক; এইরূপে, যাবৎ পুত্রলাভ না হয়, তাবৎ বিবাহ করিবেক। আর, যদি প্রথমপরিণীতা স্ত্রীর সহযোগে কোনও ব্যক্তির রতিকামনা পূর্ণ না হয়, সে রতিকামনা পূর্ণ করিবার নিমিত্ত, পূর্ব্বপরিণীতা সবর্ণা স্ত্রীর সম্মতিগ্রহণপূর্ব্বক, অসবর্ণা বিবাহ করিবেক। অতএব, পূর্ব্বপরিণীতা স্ত্রীর বন্ধ্যাত্ব প্রভৃতি নিমিত্তবশতঃ, অথবা উৎকট রতিকামনাবশতঃ, গৃহস্থ ব্যক্তির বহু বিবাহ সম্ভব; এই দুই কারণ ব্যতিরেকে, একাধিক বিবাহ শাস্ত্রানুসারে কোনও ক্রমে সম্ভবিতে পারে না। উক্তপ্রকারে বহু বিবাহ সম্ভব হওয়াতে, কোনও কোনও ঋষিবাক্যে এক ব্যক্তির বহু বিবাহের উল্লেখ দেখিতে পাওয়া যায়। যথা,


   

    ১৩

  1. মনুসংহিতা