পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৮
বহুবিবাহ।

বিলাসিনী তিন জনের প্রার্থনায় তঁহাদের পাণিগ্রহণ করিয়াছিলেন। ফলতঃ, এই বেদবাক্য অবলম্বন করিয়া, পুরুষ যদৃচ্ছাক্রমে ক্রমে ক্রমে বা একবারে বহু ভার্য্যা বিবাহ করিতে পারে, এরূপ মীমাংসা করা, আর এই বেদবাক্য মনু, যাজ্ঞবল্ক্য আপস্তম্ব প্রভৃতি ধর্মশাস্ত্র প্রবর্ত্তক ঋষিগণের দৃষ্টিপথে পতিত হয় নাই, অথবা তাঁহারা এই বেদবাক্যের অর্থবোধ ও তাৎপর্য্যগ্রহ করিতে পারেন নাই, এজন্য নিমিত্তনির্দ্দেশ পূর্ব্বক পূর্বপরিণীতা স্ত্রীর জীবদ্দশায় পুনরায় বিবাহের বিধি প্রদর্শন ও নিমিত্ত না ঘটিলে বিবাহের নিষেধ প্রদর্শন করিয়াছেন, এরূপ অনুমান করা নিরবচ্ছিন্ন অনভিজ্ঞতা প্রদর্শনমাত্র।

 তর্কবাচস্পতি মহাশয়ের অবলম্বিত বেদবাক্যরূপ প্রমাণের অর্থ ও তাৎপর্য্য প্রদর্শিত হইল। এক্ষণে, তাঁহার অবলম্বিত স্মৃতিবাক্যের অর্থ ও তাৎপর্য্য প্রদর্শিত হইতেছে।

 “ভার্যাঃ সজাতীয়াঃ সর্ব্বেষাং শ্রেয়স্যঃ স্যুঃ”।

 সজাতীয় ভার্য সকলের পক্ষে মুখ্য কষ্প।

এই পৈঠীনসিবচনে ভার্য্যা এই পদে বহুবচন আছে; ঐ বহুবচনবলে, তর্কবাচস্পতি মহাশয় যদৃচ্ছাপ্রবৃত্ত বহুভার্য্যাবিবাহ শাস্ত্রানুমত ব্যবহার বলিয়া, প্রতিপন্ন করিতে প্রবৃত্ত হইয়াছেন। কিন্তু, কিঞ্চিৎ স্থিরচিত্ত হইয়া অনুধাবন করিয়া দেখিলে, তিনি অনায়াসেই বুঝিতে পারিতেন, পৈঠীনসি এক ব্যক্তির বহুভার্য্যাবিধান অভিপ্রায়ে ভার্য্যাশব্দে বহুবচন প্রয়োগ করেন নাই। বস্তুতঃ, বহুবচনপ্রয়োগ এক ব্যক্তির বহুভার্য্যাবিবাহের পোষক নহে। “ভার্য্যা” এস্থলে ভার্য্যাশব্দে যেরূপ বহুবচনের প্রয়োগ আছে, “সর্ব্বেষাম্” এস্থলে সর্ব্বশব্দেও সেইরূপ বহুবচনের প্রয়োগ আছে। “সর্ব্বেষাম্” সকলের, অর্থাৎ ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এই তিন বর্ণের সজাতীয়া ভার্য্যা মুখ্য কল্প। ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এই তিন বর্ণের বোধনার্থে,