পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বহুবিবাহ।
১১৯

ব্যাখ্যা শ্রীকৃষ্ণ, অচ্যুতানন্দ ও কৃষ্ণকান্তের ব্যাখ্যার প্রতিবিম্বমাত্র। তন্মধ্যে বিশেষ এই, তাঁহারা তিন জনে স্ব স্ব বর্ণে পাঁচ ছয় বিবাহ দূষ্য নয়, এই মীমাংসা করিয়াছেন; তর্কবাচস্পতি মহাশয়ের বুদ্ধি তাঁহাদের সকলের অপেক্ষা অধিক তীক্ষ্ন; এজন্য তিনি, প্রত্যেক বর্ণে পাঁচ প্রভৃতি বিবাহ দূষ্য নয়, এই সিদ্ধান্ত করিয়াছেন। তর্কবাচস্পতি মহাশয় শ্রীকৃষ্ণ, অচ্যুতানন্দ ও কৃষ্ণকান্তের ব্যাখ্যার অনুসরণ করিয়াছেন; কিন্তু, তাঁহাদের ব্যাখ্যা অনুসৃত হইল বলিয়া উল্লেখ বা অঙ্গীকার করেন নাই। কেহ কেহ তদীয় এই ব্যবহারকে অন্যায়াচরণের উদাহরণস্থলে উল্লিখিত করিতে পারেন। কিন্তু, তাঁহার এই ব্যবহার নিতান্ত অভিনব ও বিস্ময়কর নহে; পরস্ব হরণ করিয়া নিজস্ব বলিয়া পরিচয় দেওয়া তাহার অভ্যাস আছে।

 এস্থলে ইহাও উল্লেখ করা আবশ্যক, রামভদ্র ন্যায়ালঙ্কার, শ্রীনাথ আচার্য্য চূড়ামণি, স্মার্ত্ত ভট্টাচার্য্য রঘুনন্দন ও মহশ্বের ভট্টাচার্য্যও দায়ভাগের টীকা লিখিয়াছেন; কিন্তু, তাঁহারা উল্লিখিত দায়ভাগলিখনের উক্তবিধ তাৎপর্য্যব্যাখ্যা করেন নাই। যাহা হউক, পূর্ব্বনির্দিষ্ট নারদবচন দ্বারা ইহা নির্ব্বিবাদে প্রতিপাদিত হইতেছে, শ্রীকৃষ্ণ তর্কালঙ্কার প্রভৃতি টীকাকার মহাশয়েরা, অথবা সর্ব্বশাস্ত্রবেত্তা তর্কবাচস্পতি মহোদয়, স্ব স্ব বর্ণে, অথবা প্রত্যেক বর্ণে, যদৃচ্ছাক্রমে যত ইচ্ছা বিবাহ করা দূষ্য নয়, ইহা দায়ভাগকারের অভিপ্রেত বলিয়া যে তাৎপর্য্য ব্যাখ্যা করিয়াছেন, তাহা কোনও মতে সঙ্গত বা সম্ভব হইতে পারে না (২৩)।

[১]


  1.  (২৩) অচ্যুতানন্দ চক্রবর্ত্তী, “ব্রহ্মণের পাঁচ ছয় সবর্ণা বিবাহ দূষ্য নয়", এই যে তাৎপর্য্যব্যাখ্যা করিয়াছেন, তাহা কেবল অনরধানমুলক বলিতে হইবেক। তদীয় তাৎপর্ষ্যব্যাখ্যার মর্ম্ম এই, ব্রাহ্মণ যদৃচ্ছাক্রমে যত ইচ্ছা সবর্ণ বিবাহ করতে পারে। কিন্তু, তিনি দায়ভাধৃত

     সবর্ণাগ্রে দ্বিজাতীনাং প্রশস্তা দারকর্ম্মণি।
     কামতস্তু প্রবৃত্তানামিমাঃ স্যুঃ ক্রমশোহবরা।৩।১২।

    }}