পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তর্কবাচস্পতিপ্রকরণ

প্রথম পরিচ্ছেদ

শ্রীযুত তারানাথ তর্কবাচস্পতি সিদ্ধান্ত করিয়াছেন, যে মনুবচন অনুসারে, রতিকামনাস্থলে সবর্ণাবিবাহনিষেধ প্রতিপাদিত হইয়াছে, আমি ঐ বচনের প্রকৃত অর্থের গোপন ও অকিঞ্চিৎকর অভিনব অর্থের উদ্ভাবন পূর্ব্বক লোককে প্রতারণা করিয়াছি। তিনি লিখিয়াছেন,

“অহো বৈদগ্ধী প্রজ্ঞাবতো বিদ্যাসাগরস্য যদকিঞ্চিৎকরাভি-
নবার্থ প্রকাশনেন বহবো লোকা ব্যামোহিতা ইতি[১]
প্রজ্ঞাবান্ বিদ্যাসাগরের কি চাতুরী! অকিঞ্চিৎকর অভিনব
অর্থের উদ্ভাবনদ্বারা অনেক লোককে বিমোহিত করিয়াছেন।

এ বিষয়ে আমার বক্তব্য এই যে, এখন পর্য্যন্ত আমার এই দৃঢ় বিশ্বাস আছে, আমি মনুবচনের যে অর্থ লিখিয়াছি, উহাই ঐ বচনের প্রকৃত ও চির প্রচলিত অর্থ; লোকবিমোহনার্থ আমি বুদ্ধিবলে অভিনব অর্থের উদ্ভাবন করি নাই। শাস্ত্রীয় বিচারে প্রবৃত্ত হইয়া, অভিপ্রেত সাধনের নিমিত্ত, শাস্ত্রের প্রকৃত অর্থ গোপন করিয়া, ছল বা কৌশল অবলম্বনপূর্ব্বক, লোকসমাজে কপোলকম্পিত অপ্রকৃত অর্থ প্রচার করা নিতান্তু মুঢ়মতি, নিতান্ত নীচপ্রকৃতির কর্ম্ম। আমি জ্ঞানপূর্ব্বক কখনও সেরূপ গর্হিত আচরণে দূষিত হই নাই; এবং যত দিন জীবিত


  1. বহুবিবাহবাদ, ৪৬ পৃষ্ঠা