পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/১৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।
১৪৭

ধর্ম্মসম্পন্না ও পুত্রসম্পন্না স্ত্রী বিদ্যমান থাকিলে, আর বিবাহ করিতে পারিবেক না, এই চিরপ্রচলিত অর্থের বিলক্ষণ সমর্থনই হইতেছে।

 এইরূপ পাঠান্তর ও অর্থান্তর কল্পনা করিয়া, তর্কবাচস্পতি মহাশয়, যে অভূতপূর্ব্ব ব্যবস্থা প্রচার করিয়াছেন, তাহা উল্লিখিত ও আলোচিত হইতেছে।

 ‘বিধানপারিজাতধৃত বৌধায়নসূত্রে এ বিষয়ের বিশেষ ব্যবস্থা আছে। যথা, “অগ্নিহোত্রাদি গৃহস্থকর্ত্তব্য সমস্ত ধর্ম্ম ও পুত্রলাভ সম্পন্ন হইলে, যদি স্ত্রীবিয়োগ ঘটে, তাহা হইলে আর বিবাহ করিবেক না’। কিন্তু বানপ্রস্থ অথবা পরিব্রজ্যা আশ্রম আশ্রয় করিবেক; যেহেতু, “ঋনত্রয়ের পরিশোধ করিয়া মোক্ষে মনোনিবেশ করিবেক”, এইরূপে মনু, ঋণত্রয়ের পরিশোধ হইলে, মোক্ষ বিষয়ে অধিকার বিধান করিয়াছেন”।

ধর্ম্ম ও পুত্রলাভ সম্পন্ন হইলে, যদি স্ত্রীবিয়োগ ঘটে, তাহা হইলে আর বিবাহ না করিয়া, বানপ্রস্থ অথবা পরিব্রজ্যা অবলম্বন করিবেক, তর্কবাচস্পতি মহাশয়ের এই ব্যবস্থা কোনও অংশে শাস্ত্রানুসারিণী নহে। আশ্রম বিষয়ে দ্বিবিধ ব্যবস্থা স্থিরীকৃত আছে[১]। প্রথম ব্যবস্থা অনুসারে, যথাক্রমে চারি আশ্রমের অনুষ্ঠান আবশ্যক। অর্থাৎ, জীবনের প্রথম ভাগে ব্রহ্মচর্য্য, দ্বিতীয় ভাগে গার্হস্থ্য, তৃতীয় ভাগে বানপ্রস্থ, চতুর্থ ভাগে পরিব্রজ্যা, অবলম্বন করিবেক। দ্বিতীয় ব্যবস্থা অনুসারে, যাহার বৈরাগ্য জন্মিবেক, সে ব্রহ্মচর্য্য সমাপনের পর, যে অবস্থায় থাকুক, পরিব্রজ্যা অবলম্বন করিবেক। এক ব্যক্তি গৃহস্থাশ্রমে প্রবেশ ও দারপরিগ্রহ করিয়াছে, পুত্রোৎপাদনের পূর্ব্বেই তাহার বৈরাগ্য জন্মিল; তখন তাহাকে, পুত্রোৎপাদনের অনুরোধে, আর সংসারাশ্রমে থাকিতে হইবেক না; যে

  1. দ্বিতীয় পরিচ্ছেদের প্রথম অংশ দেখ।