পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/১৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫৮
বহুবিবাহ।

পাণিনি ও আপস্তম্বের বিরোধ ভঞ্জন করেন, তাহা দেখিবার জন্য . অত্যন্ত কৌতুহল উপস্থিত হইতেছে। তর্কবাচস্পতি মহাশয় কি এত সৌজন্যপ্রকাশ করিবেন, যে দয়া করিয়া এ বিষয়ে আমাদের কৌতুহলনিবৃত্তি করিয়া দিবেন।

 সচরাচর সকলে অবগত আছেন, ঋষিরা লিঙ্গ, বিভক্তি, বচন প্রভৃতি বিষয়ে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্রেচ্ছ ছিলেন; তাঁহারা সে বিষয়ে অদ্যদায় নিয়মের অনুবর্তী হইয়া চলেন নাই। এজন্য, পাণিনিপ্রভৃতিপ্রণীত প্রচলিত ব্যাকরণ অনুসারে যে সকল প্রয়োগ অপপ্রয়োগ বলিয়া পরিগণিত হয়; ঋষিপ্রণীত গ্রন্থে সেই সকল প্রয়োগ আর্য বলিয়া পরিগৃহীত হইয়া থাকে; অর্থাৎ, ঐ সকল প্রয়োগ যখন ঋষির মুখ বা লেখনী হইতে নিৰ্গত হইয়াছে, তখন তাহা অপপ্রয়োগ নহে। পাণিনি ও আপস্তম্ব উভয়েই ঋষি। পাণিনির মতে, দারশব্দ বহুবচনে প্রযুক্ত হওয়া আবশ্যক; অণপস্তম্বের মতে, দারশব্দ এক বচনে প্রযুক্ত হওয়া দোষ বহু নহে। ফলকথা এই, ঋষিরা সকলেই সমান ও স্বস্বপ্রধান ছিলেন। কোনও ঋষিকে অপর ঋষির প্রতিষ্ঠিত নিয়মের অনুবর্তী হইয়া চলিতে হইত না। সুতরাং, আপস্তম্বকত প্রয়োগ, পাণিনিবিরুদ্ধ হইলেও, হেয় বা আশ্রদ্ধেয় হইতে পারে না। যিনি যে বিষয়ের ব্যবসায়ী, সে বিষয়ে স্বভাবতঃ তাঁহার অধিক পক্ষপাত থাকে। তর্কবাচস্পতি মহাশয় বহুকালের ব্যাকরণব্যবসায়ী; সুতরাং, অন্যান্য শাস্ত্র অপেক্ষা ব্যাকরণে তাঁহার অধিক পক্ষপাত থাকিলে, তাহাকে দোষ দিতে পারা যায় না। অতএব, ব্যাকরণের নিয়মরক্ষার পক্ষপাতী হইয়া, ধর্ম্মশাস্ত্রের গ্রীবাভঙ্গে প্রবৃত্ত হওয়া তাঁহার পক্ষে তাদৃশ দোষের বা আশ্চর্য্যের বিষয় নহে।

 যদৃচ্ছাপ্রবৃত্ত বহুবিবাহকাণ্ডের শাস্ত্রীয়তা প্রতিপাদন প্রয়াসে, তর্কবাচস্পতি মহাশয় যে সকল প্রমাণ প্রদর্শন করিয়াছেন, উহাদের