পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
বহুবিবাহ।

দ্বারা অনেক লোককে বিমোহিত করিয়াছেন, “এই নির্দেশ সঙ্গত হইতেছে কি না। সর্বশাস্ত্রবেত্তা তর্কবাচস্পতি মহাশয়, ধর্ম্মশাস্ত্রব্যবসায়ী হইলে, অম্লান বদনে এরূপ উদ্ধত, এরূপ অসঙ্গত নির্দ্দেশ করিতে পারিতেন না। ফলতঃ, পরাশরভাষ্যে মাধবাচার্য্য মনুবচনের এবংবিধ ব্যাখ্যা লিখিয়াছেন, ইহা অবগত থাকিলে, তিনি আমার উপর ঈদৃশ দোষারোপ করিতেন, এরূপ বোধ হয় না। যাহা হউক, আমি প্রকৃত অর্থের গোপন অথবা অকিঞ্চিৎকর অভিনব অর্থের উদ্ভাবন পূর্বক লোককে প্রতারণা করিয়াছি, তিনি এই যে বিষম অপবাদ দিয়াছেন, এক্ষণে বোধ করি সেই অপবাদ হইতে অব্যাহতি পাইতে পারিব।

 তর্কবাচস্পতি মহাশয়, অন্যদীয় মীমাংসায় দোষারোপ করিয়া, যথার্থ শাস্ত্রার্থ সংস্থাপনে প্রবৃত্ত হইয়াছেন; কিন্তু, তাদৃশ গুরুতর বিষয়ে হস্তক্ষেপ করিয়া, তত্ত্বনির্ণয় নিমিত্ত, যেরূপ যত্ন ও যেরূপ পরিশ্রম করা আবশ্যক, তাহা করেন নাই; সুতরাং, অভিপ্রেত সম্পাদনে কৃতকার্য হইতে পারেন নাই। আমি, মনুবচন অবলম্বন করিয়া, যদৃচ্ছাপ্রবৃত্ত বহুবিবাহব্যবহারের অশাস্ত্রীয়তা প্রতিপাদন করিয়াছি; এজন্য আমার লিখিত অর্থ যথার্থ কি না, তাহার পরীক্ষা করিবার নিমিত্ত মনুসংহিতা দেখা আবশ্যক বোধ হইয়াছে; তদনুসারে তিনি মনুসংহিতা বহিষ্কৃত করিয়াছেন, এবং পুস্তক উদ্ঘাটিত করিয়া, আপাততঃ মূলে যেরূপ পাঠ ও টীকায় যেরূপ অর্থ দেখিয়াছেন, অসন্দিহান চিত্তে, তাহাকেই প্রকৃত পাঠ ও প্রকৃত অর্থ স্থির করিয়া, তদনুসারে মীমাংসা করিয়াছেন; এই বচন অন্যান্য গ্রন্থকর্ত্তারা উদ্ধৃত করিয়াছেন কি না, এবং যদি উদ্ধৃত করিয়া থাকেন, তাঁহারা কিরূপ পাঠ ধরিয়াছেন এবং কিরূপ ব্যাখ্যা করিয়াছেন, তাহা অনুসন্ধান করিয়া দেখা আবশ্যক বিবেচনা করেন নাই। প্রথমতঃ, তাঁহার অবলম্বিত মুলের পাঠ সমালোচিত হইতেছে।