পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।
১৯৩

 “যদি তাহাদের আচরণ অনুকার্য্যই না হইবে, তবে
 যদ্যাচরতি শ্রেষ্ঠত্তদেবেতরো জনঃ”।

 ইত্যাদি অর্জুনের প্রতি ভগবদুপদেশই বা কি আশয়ে ব্যক্ত
 হইয়াছিল? ইহাও আমাদের সুগম নহে” (৬)।

[১]

কৃষ্ণ অর্জ্জুনকে কহিয়াছিলেন, প্রধান লোকে যে সকল কর্ম্ম করে, সামান্য লোকে সেই সকল কর্ম্ম করিয়া থাকে; অর্থাৎ প্রধান লোকের অনুষ্ঠানকে দৃষ্টান্তস্থলে প্রতিষ্ঠিত করিয়া, সামান্য লোকে তদনুসারে চলে। পূর্ব্বকালীন দুষ্যন্ত প্রভৃতি রাজারা প্রধান ব্যক্তি; তাঁহারা যদৃচ্ছাক্রমে বহু বিবাহ করিয়াছিলেন। যদি তাঁহাদের আচরণদর্শনে তদনুসারে চলা কর্তব্য না হয়, তাহা হইলে, ভগবান্ বাসুদেব কি আশয়ে অর্জ্জুনকে ওরূপ উপদেশ দিলেন, সামশ্রমী মহাশয় সহজে তাহা হৃদয়ঙ্গম করিতে পারেন নাই। এ বিষয়ে বক্তব্য এই যে, সামশ্রমী মহাশয় ভগবাক্যের অর্থ- বোধ ও তাৎপর্য্যগ্রহ করিতে পারেন নাই, এজন্যই “অর্জুনের প্রতি ভগবদুপদেশই বা কি আশয়ে ব্যক্ত হইয়াছিল?”, তাহা তাঁহার পক্ষে “সুগম” হয় নাই। এই ভগবদুক্তি উপদেশবাক্য নহে; উহা পূর্ব্বগত উপদেশবাক্যের সমর্থনার্থ লোকব্যবহার কীর্ত্তনমাত্র। যথা,

 তন্মাদসক্ত সততং কার্য্যং কর্ম্ম সমাচর।
 অসক্তো হ্যাচরম্ কর্ম্ম পরমাপ্নোতি পূরুষঃ॥৩১৯। (৭)

 [২]

 অতএব, আসক্তিশুন্য হইয়া, সতত কর্তব্য কর্ম্ম কর। আসক্তি-
 শূন্য হইয়া কর্ম্ম করিলে, পুরুষ মোক্ষপদ পায়।

এইটি অর্জ্জুনের প্রতি ভগবানের উপদেশবাক্য। এইরূপে কর্তব্য কর্ম্ম করণের উপদেশ দিয়া, তাহার ফলকীর্ত্তন ও প্রয়োজনপ্রদর্শন করিতেছেন,


  1. বহুবিবাহৰিচারসমালোচনাা, ৬ পৃষ্ঠা।}}
  2. ভগবদ্গীতা।