পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।
১৫

সবর্ণাগ্রে দ্বিজাতীনাং প্রশস্তা দারকর্ম্মণি।
কামতস্তু প্রবৃত্তানামিমাঃ স্যুঃ ক্রমশো “হবরাঃ"।

ফলতঃ, “ক্রমশো বরাঃ” এ স্থলে “অবরাঃ”এই পাঠই যে প্রকৃত পাঠ, তদ্বিষয়ে কোনও অংশে সংশয় করা যাইতে পারে না। যাঁহারা “ক্রমশঃ বরাঃ” এই পাঠ প্রকৃত পাঠ বলিয়া বিতণ্ডা করিতে উদ্যত হইবেন, পুস্তকে লুপ্ত অকারের চিহ্ন নাই, ইহাই তাঁহাদের এক মাত্র প্রমাণ। কিন্তু লুপ্ত অকারের চিহ্ন না থাকা সচরাচর ঘটিয়া থাকে; সুতরাং উহা প্রবল প্রমাণ বলিয়া পরিগৃহীত হইতে পারে না।[১]। এ দিকে, জীমূতবাহনপ্রণীত দায়ভাগে “অবরাঃ” এই পাঠ পূর্ব্বাপর চলিয়া আসিতেছে, তাহার নিঃসন্দিগ্ধ প্রমাণ পাওয়া যাইতেছে[২]; আর মাধবাচার্য্য, মিত্রমিশ্র ও বিশ্বেশ্বরভট্ট স্পষ্টাক্ষরে “অবরাঃ” পাঠ ধরিয়া ব্যাখ্যা করিয়াছেন। এমন স্থলে, সকলে বিবেচনা করিয়া দেখুন, “বরাঃ” “অবরাঃ” এ উভয়ের মধ্যে কোন পাঠ প্রকৃত পাঠ বলিয়া পরিগণিত হওয়া উচিত।

 তর্কবাচস্পতি মহাশয়ের অবলম্বিত পাঠ মনুবচনের প্রকৃত পাঠ নহে, তাহা একপ্রকার প্রদর্শিত হইল। এক্ষণে, তাঁহার আশ্রয়ভূত টীকার বলাবল পরীক্ষিত হইতেছে।

  1. সংস্কৃতবিদ্যালয়ে পরাশরভাষ্য, বীরমিত্রোদয়, ও মদনপারিজাতের যে পুস্তক আছে, তাহাতে “ক্রমশো বরাঃ” এ স্থলে লুপ্ত অকারের চিহ্ন নাই; অথচ গ্রন্থকর্ত্তারা “অবরাঃ” এই পাঠ ধরিয়া ব্যাখ্যা করিয়াছেন।
  2. দায়ভাগ এপর্য্যন্ত চারি বার মুদ্রিত হইয়াছে, সর্ব্বপ্রথম, ১৪৩৫ শাকে বাবুরামপণ্ডিত; দ্বিতীয়, ১৭৫০ শাকে লক্ষ্মীনারায়ণ ন্যায়ালঙ্কার; তৃতীয়, ১৭৭২ শাকে শ্রীযুত ভরতচন্দ্রশািরোমণি; চতুর্থ, ১৭৮৫ শাকে বাবু প্রসন্নকুমার ঠাকুর মুদ্রিত করেন। এই চারি মুদ্রিত পুস্তকেই “অবরাঃ” এই পাঠ আছে। আর যত গুলি হস্তলিখিত পুস্তক দেখিয়াছি, তৎসমুদয়েই “অবরাঃ” এই পাঠ দৃষ্ট হইতেছে।