পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/২১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০৮
বহুবিবাহ।

পারে। এই দুই বচনে এতন্মাত্র উপলব্ধ হইতেছে যে, এক ব্যক্তির সজাতীয়া, অথবা সজাতীয়া বিজাতীয়া, বহু ভার্য্যা আছে; তাহারা সকলেই, অথবা তন্মধ্যে অনেকেই, পুত্ত্রবর্তী হইয়াছে। মনে কর, এক ব্যক্তি ক্রমে ক্রমে চারি স্ত্রী বিবাহ করিয়াছে, এবং চারি স্ত্রীই পুত্ত্রবর্তী হইয়াছে। কোন সময়ে কাহার পুত্ত্র জন্মিয়াছে, যে ব্যক্তি তাহা অবগত নহেন, তিনি কখনই অবধারিত বলিতে পারবেন না, যে পূর্ব্ব পূর্ব্ব স্ত্রীর সন্তান হইলে পর, পর পর স্ত্রী বিবাহিত হইয়াছে; কারণ, পূর্ব্ব পূর্ব্ব স্ত্রীর সন্তান হইলে পর, পর পর স্ত্রীর বিবাহ যেরূপ সম্ভব; সকলের বিবাহ হইলে পর, তাহাদের সন্তান হইতে আরম্ভ হওয়াও সেইরূপ সম্ভব। বিশেষজ্ঞ না হইলে, এরূপ স্থলে একতর পক্ষ নির্ণয় করিয়া নির্দ্দেশ করা সম্ভবিতে পারে না। অতএব, “ইহা দ্বারা কি সবর্ণা পুত্ত্রবর্তী ভার্য্যা থাকিতেও পুনঃ সবর্ণাপরিণয় প্রতিপন্ন হইতেছে না”, এরূপ নিশ্চয়াত্মক নির্দেশ না করিয়া, “ইহা দ্বারা কি সবর্ণা পুত্ত্রবতী ভার্য্যা থাকিতেও পুনঃ সবর্ণাপরিণয় সম্ভব বলিয়া বোধ হইতে পারে না”, এরূপ সংশয়াত্মক নির্দ্দেশ করিলে অধিকতর ন্যায়ানুগত হইত।

 কিঞ্চ, আমার মতে, অর্থাৎ আমি যেরূপ শাস্ত্রের অর্থবোধ ও তাৎপর্য্যগ্রহ করিতে পারিয়াছি, তদনুসারে, পুত্ত্রবর্তী সবর্ণা ভার্য্যা সত্ত্বে পুনরায় সবর্ণাপরিণয় অসিদ্ধ বা অপ্রসিদ্ধ নহে। মনে কর, ব্রাহ্মণজাতীয় পুরুষ সবর্ণাবিবাহ করিয়াছে, এবং ঐ সবর্ণা পুত্ত্রবর্তী হইয়াছে; এই পুত্ত্রবর্তী সবর্ণা ভার্য্যা ব্যভিচারিণী, চিররোগিণী, সুরাপারিণী, পতিদ্বেষিণী, অর্থনাশিনী বা অপ্রিয়বাদিনী স্থির হইলে, শাস্ত্রানুসারে ঐ ব্যক্তির পুনরায় সবর্ণা বিবাহ করা আবশ্যক; সুতরাং, উক্তবিধ নিমিত্ত ঘটিলে, পুত্ত্রবতী সবর্ণাসত্ত্বে সবর্ণাপরিণয় সম্পূর্ণ সম্ভব হইতেছে। অতএব, যদি সামশ্রমী মহাশয়ের উল্লিখিত পূর্ব্বনির্দ্দিষ্ট মনুবচনদ্বয়ে পুত্ত্রবতী সবর্ণাসত্ত্বে সবর্ণাপরিণয় প্রতিপন্ন