পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/২১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।
২১১

স্থল। উভয়েই প্রাচীন, উভয়েই বহুদর্শী, উভয়েই বিদ্যাবিশারদ বলিয়া বিখ্যাত; উভয়েই যদৃচ্ছাপ্রবৃত্ত বহুবিবাহব্যবহারের শাস্ত্রীয়তা সংস্থাপনে প্রবৃত্ত হইয়াছেন; কিন্তু, আক্ষেপের বিষয় এই, উভয়েই ধর্ম্মশাস্ত্রব্যবসায়ী নহেন; এজন্য, উভয়েই ধর্ম্মশাস্ত্রবিষয়ে অনভিজ্ঞতার পরা কাষ্ঠা প্রদর্শন করিয়াছেন। যাহা হউক, যদৃচ্ছা প্রবৃত্ত বহুবিবাহকাণ্ড শাস্ত্র বহির্ভূত ব্যবহার, এই ব্যবস্থা বিষয়ে কবিরত্ন মহাশয় যে সকল আপত্তি উত্থাপন করিয়াছেন, তাহা ক্রমে আলোচিত হইতেছে।

 কবিরত্ন মহাশয়ের প্রথম আপত্তি এই;—

 “মন্বাদিবচন নিদর্শন করিয়া বহুবিবাহ রহিত করা লিখিয়াছেন; তাহাতে যদ্যপি শাস্ত্রাবলম্বন করিতে হয়, তবে শাস্ত্রের যথার্থ ব্যাখ্যা করিয়া ব্যবস্থা নিতে হয়। শাস্ত্রার্থ গোপন করিয়া ভ্রান্তিতেই বা অন্যথা ব্যাখ্যা করিয়া ব্যবস্থা দেওয়া উচিত নহে, পাপ হয়। মন্বাদিবচন যে নিদর্শন দেখাইয়াছেন, তাহার ব্যাখ্যা যথার্থ বোধ হইতেছে না।

 মনুবচন যথা,

গুরুণানুমতঃ স্নাত্বা সমাবৃত্তো যথাবিধি।
উদ্বহেত দ্বিজো ভার্য্যাং সবর্ণাং লক্ষণান্বিতাম্।

 এই বচনে ব্রহ্মচর্য্যানন্তর ব্রাহ্মণাদি দ্বিজ গুরুর অনুমতিক্রমে অবভৃখ স্নান করিয়া বিধিক্রমে সমাবর্ত্তন করিয়া সুলক্ষণা সবর্ণা কন্যা বিবাহ করিবে। সবর্ণা লক্ষণান্বিতা এই দুই শব্দ প্রশস্তাভিপ্রায়, নতুবা হীনলক্ষণা কন্যার বিবাহ সম্ভব হয় না। তাহাই পরে বলিয়াছেন এবং পরবচনে প্রশস্তাশব্দ সার্থক হয় না। তদ্বচনং যথা

সবর্ণাগ্রে দ্বিজাতীনাং প্রশস্তা দারকর্ম্মণি।
কামতস্তু প্রবৃত্তানামিমাঃ স্যুঃ ক্রমশোবরাঃ।