পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/২২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২১৮
বহুবিবাহ

 ৬। মাধবাচার্য্য কহিয়াছেন,

 প্রতিলোমজাস্তু বর্ণবাহ্যত্বাৎ পতিতা অধমাঃ (১২)[১]

 প্রতিলোমজের বর্ণধর্ম্মবহিষ্কৃত, অতএব পতিত ও অধম।

 ৭। জীমুতবাহন কহিয়াছেন,

 প্রতিলোমপরিণয়নং সর্ব্বথৈব ন কার্য্যয্ (১৩)[২]

 প্রতিলোমবিবাহ কদাচ করিবেক না।

দেখ, নারদপ্রভৃতি প্রতিলোম বিবাহকে স্পষ্টাক্ষরে অবৈধ বলিয়া নির্দ্দেশ করিয়াছেন। কবিরত্ন মহাশয়ের উদাহৃত যযাতিদেবজানৗবিবাহ প্রতিলোম বিবাহ হইতেছে। প্রতিলোম বিবাহ যে সর্ব্বতোভাবে শাস্ত্রবিগর্হিত ও ধর্ম্মবহির্ভূত কর্ম্ম, কবিরত্ন মহাশয়ের সে বোধ নাই; এজন্য তিনি, “ক্ষত্রিয়জাতিও প্রথম অসবর্ণ বিবাহ করিয়াছেন “, এই ব্যবস্থা নির্দেশ করিয়া, তাহার প্রামাণ্যার্থে যযাতিদেবজানীবিবাহ উদাহরণস্থলে বিন্যস্ত করিয়াছেন।

 কবিরত্ন মহাশয়, ঋষিদিগের প্রাথমিক অসবর্ণাবিবাহের কতিপয় উদাহরণ প্রদর্শন করিয়া, লিখিয়াছেন, “যদি অবিধি হইত তবে বেদবহিরভূত কর্ম্ম মহর্ষিরা করিতেন না”। ইহার তাৎপর্য্য এই, মহর্ষিরা শাস্ত্রপারদর্শী ও পরম ধার্ম্মিক ছিলেন; সুতরাং, তাঁহারা অবৈধ অচিরণে প্রবৃত্ত হইবেন, ইহা সম্ভব নহে। যখন, তাঁহারা প্রথমে অসবর্ণা বিবাহ করিয়াছেন, তখন তাহা কোনও ক্রমে অবৈধ নহে। এ বিষয়ে বক্তব্য এই যে, মহর্ষিরা বা অন্যান্য মহৎ ব্যক্তিরা অবৈধ কর্ম্ম করিতে পারিতেন না, অথবা করেন নাই, ইহা নিরবচ্ছিন্ন অবোধ ও অনভিজ্ঞর কথা। যখন ধর্মশাস্ত্রে প্রথমে অসবর্ণাবিবাহ

  1. (১২) পরাশরভাষ্য, দ্বিতীয় অধ্যায়
  2. (১৩) দায়ভাগ।