পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/২৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।
২২৫

 যে ব্যক্তি সংবৎরকাল আশ্রমবিহীন হইয়া থাকে, সে প্রাজাপত্য কৃচ্ছ্র, প্রায়শ্চিত্ত করিয়া, আশ্রম অবলম্বন করিবেক; দ্বিতীয় বৎসরে অতি কৃচ্ছ্র, তৃতীয় বৎসর কৃচ্ছ্রাতিকৃচ্ছ্র, তৎপরে চান্দ্রায়ণ করিবেক।

এই শাস্ত্রে এক বৎসর, দুই বৎসর, তিন বৎসর, অথবা তদপেক্ষা অধিক কাল বিনা আশ্রমে অবস্থিত হইলে, পৃথক্ পৃথক্ প্রায়শ্চিত্ত, ও প্রায়শ্চিত্তের পর আশ্রমাবলম্বন, অতি স্পষ্টাক্ষরে ব্যবস্থাপিত হইয়াছে; সুতরাং, আশ্রমবিহীন ব্যক্তি প্রায়শ্চিত্তার্হ দোষভাগী হয়, সে বিষয়ে সংশয় বা আপত্তি করিবার আর পথ থাকিতেছে না। অতএব, যদিও কবিরত্ন মহাশয়ের অধীত ব্যাকরণ অনুসারে অন্যবিধ অর্থ প্রতিপন্ন হয়; কিন্তু, হারীত বচনের সহিত একবাক্যতা করিয়া, দক্ষবচনস্থিত “প্রায়শ্চিত্তীয়তে” এই পদের “প্রায়শ্চিত্তার্হ দোষভাগী হয়”, এই অর্থই স্বীকার করিতে হইতেছে। বস্তুতঃ, ঐ পদের ঐ অর্থই প্রকৃত অর্থ। বৈয়াকরণকেশরী কবিরত্ন মহাশয়ের ধর্ম্মশাস্ত্রে দৃষ্টি নাই, বহুদর্শন নাই, তত্ত্বনির্ণয়ে প্রবৃত্তি নাই, কেবল কুতর্ক অবলম্বনপূর্ব্বক প্রস্তাবিত বিষয়ে প্রতিবাদ করাই প্রকৃত উদ্দেশ্য; এই সমস্ত কারণে প্রকৃত অর্থও অপ্রকৃত বলিয়া প্রতীয়মান হইয়াছে। যাহা হউক, এক্ষণে সকলে বিবেচনা করিয়া দেখুন, বিনা আশ্রমে অবস্থিত হইলে, পাপস্পর্শ হয় কি না, এবং সেই পাপ বিমোচনার্থে প্রায়শ্চিত্ত করা আবশ্যক কি না; আর, অপক্ষপাত হৃদয়ে বিচার করিয়া বলুন, “বিনা আশ্রমে অবস্থিত হইলে প্রায়শ্চিত্তীয়তে” এ স্থলে “প্রায়শ্চিত্তার্হ দোষ ঋষি বলেন নাই”, এই তাৎপর্য্যব্যাখ্যা সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞতামূলক, কবিরত্ন মহাশয়ের ইহা স্বীকার করা উচিত কি না।

 “এই শাস্ত্রার্থপ্রযুক্ত পূর্ব্ব পূর্ব্ব কালে অনেক ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্যেরা সমাবর্ত্তন করিয়াও বিবাহ না করিয়া স্নাতক হইয়া থাকিতেন তাহার নিদর্শন পরাশর ও ব্যাস ঋষ্যশৃঙ্গের পিতা