পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/২৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।
২৩৯

বাক্যতা ঘটিতে পারে না। আর, সাগ্নিক বিশেষের পক্ষে সদ্যঃশৌচের ব্যবস্থা আছে, যথার্থ বটে; কিন্তু সেই সাগ্নিক দ্বিজ, স্ত্রীর দাহান্তে স্নান ও আচমন করিয়া শুচি হইয়া, সেই দিনেই বিবাহ করিতে পারে, কবিরত্ন মহাশয়ের এ ব্যবস্থা, অত্যন্ত বিস্ময়কর; কারণ, অশৌচসঙ্কোচব্যবস্থার উদ্দেশ্য এই যে, শাস্ত্রকারেরা যে সকল কর্ম্মের নাম নির্দেশ করিয়া সদ্যঃশৌচের বিধি দিয়াছেন, কেবল তত্তং কর্ম্মের জন্যই সে ব্যক্তি তত্তৎকালে শুচি হয়, তত্তৎ কর্ম্ম সমাপ্ত হইলেই পুনরায় অশুচি হয়; সে সময়ে সন্ধ্যাবন্ধন পঞ্চযজ্ঞানুষ্ঠান প্রভৃতি নিত্য কর্ম্মেরও বাধ হইয়া থাকে; এ অবস্থায় দারপরিগ্রহ বিধিসিদ্ধ, ইহা কোনও মতে সম্ভবিতে পারে না। ফলকথা এই, কবিরত্ন মহাশয়, ধর্ম্মশাস্ত্র বিষয়ে সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞ; অশৌচসঙ্কোচের উদ্দেশ্য কি, তাহা জানেন না, দক্ষবচন ও পরাশরবচনের অর্থ ও তাৎপর্য্য কি, তাহা জানেন না; এজন্যই এরূপ অসঙ্গত ও অশ্রুতপূর্ব্ব ব্যবস্থা প্রচার করিয়াছেন। যাহার যে শাস্ত্রে বোধ ও অধিকার না থাকে, নিতান্ত অর্ব্বাচীন না হইলে, সে ব্যক্তি সাহস করিয়া সে শাস্ত্রের মীমাংসায় হস্তক্ষেপ করে না। কবিরত্ন মহাশয়, প্রাচীন ও বহুদৰ্শী হইয়া, কি বিবেচনায় অনধীত অননুশীলিত ধর্ম্মশাস্ত্রের মীমাংসায় হস্তক্ষেপ করিলেন, বুঝিতে পারা যায় না। যাহা হউক, কবিরত্ন মহাশয়ের অদ্ভুত ব্যবস্থার উপযুক্ত দৃষ্টান্তস্বরূপ যে একটি সামান্য উপাখ্যান স্মৃতিপথে আরূঢ় হইল, তাহা এ স্থলে উদ্ধৃত না করিয়া, ক্ষান্ত হইতে পারিলাম না।

 “যার যে শাস্ত্র কিঞ্চিম্মাত্রও অধীত নয় সে শাস্ত্রেতে তাহার উপদেশ গ্রাহ করিবে না ইহার কথা। এক রাজার নিকটে বিপ্রাভাষ নামে এক বৈদ্য থাকে সে চিকিৎসাতে উত্তম তাহার পঞ্চত্ব প্রাপ্তি হইলে পর ঐ রাজা রামকুমার নামে তৎপুত্ত্রকে তাহার পিতৃপদে স্থাপিত করিলেন। ঐ ভিষকৃপুত্ত্র রামকুমার ব্যাকরণ সাহিত্য কিঞ্চিৎ পড়িয়া বুৎপন্ন ছিল