পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/২৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪৬
বহুবিবাহ।

প্রতিপাদিত হইয়াছে, প্রথমে অসবর্ণাবিবাহ সর্ব্বতোভাবে শাস্ত্র বহির্ভূত ও ধর্ম্মবিগর্হিত কর্ম্ম। অতএব, যখন প্রথমে অসবর্ণাবিবাহ সর্ব্বতোভাবে বিধিবিরুদ্ধ কর্ম্ম বলিয়া স্থিরীকৃত আছে, এবং যখন বিষ্ণুবচনে বয়ঃকনিষ্ঠা সবর্ণার উল্লেখ অন্য দুই প্রকারে সম্পূর্ণ সম্ভব হইতেছে, তখন ঐ উল্লেখমাত্র অবলম্বন করিয়া, প্রথমে অসবর্ণাবিবাহ নিষিদ্ধ নহে, এরূপ সিদ্ধান্ত নিতান্তু অসঙ্গত ও সম্পূর্ণ ভ্রান্তিমূলক, তাহার সংশয় নাই।

 কবিরত্ন মহাশয় স্বীয় বিচারপুস্তকের শাস্ত্রীয় অংশ সমাপন করিয়া উপসংহার করিতেছেন,

 “এই সকল শাস্ত্রদৃষ্টিতে আমার বুদ্ধিসিদ্ধ বহুবিবাহ শাস্ত্রসিন্ধ অশান্ত্রিক নহে। তবে যদি বহুবিবাহ রহিতের বাসনা সিদ্ধ করিতে হয় তবে শাস্ত্রবিলম্বন ত্যাগ করুন। শাস্ত্রের যথার্থ ব্যাখ্যা করিয়া, মূর্খদিগকে বুঝাইয়া শাস্ত্রসম্মত কর্ম্ম বলিয়া প্রকাশ করার আবশ্যক কি (৫২)[১]”।

 “এই সকল শাস্ত্রদৃষ্টিতে আমার বুদ্ধিসিদ্ধ বহুবিবাহ শাস্ত্রসিদ্ধ অশান্ত্রিক নহে”।—কবিরত্ন মহাশয়, ধর্মশাস্ত্রবিচারে প্রবৃত্ত হইয়া, বুদ্ধির যেরূপ পরিচয় দিয়াছেন, তাহা ইতিপূর্বে সবিস্তর দর্শিত হইয়াছে। অতএব, বহুবিবাহ শাস্ত্রসিদ্ধ অশান্ত্রিক নহে ইহা, তাঁহার বুদ্ধিসিদ্ধ, তদীয় এই নির্দ্দিশ কত দূর আদরণীয় হওয়া উচিত, তাহা সকলে বিবেচনা করিয়া দেখিবেন।—“তবে যদি বহুবিবাহ

 আছে। কখনও কখনও, কুলকর্ম্মানুরোধে, কুলীন কায়স্থ প্রথমে অতি অল্প বয়স্কা কুলীন কন্যার সহিত পুত্রের বিবাহ দিয়া তৎপরে অধিক বয়স্কা মৌলিককন্যার সহিত বিবাহ দিয়া থাকেন। পূর্ব্বকালীন ব্রাহ্মণের পক্ষে প্রথমে অসবর্ণা বিবাহ যেরূপ নিষিদ্ধ ছিল; ইদানীন্তন কুলীন কায়স্থের পক্ষে প্রথমে মৌলিককন্যা বিবাহ সেইরুপ নিষিদ্ধ।

  1. (৫২) বহুবিবাহরাহিত্যারাহিত্যনির্ণয়, ২৬ পৃষ্ঠা।