পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।
৩৯

মতে উদ্দেশ্য নহে; সুতরাং তাহা অবিহিত ও অনুষ্ঠানে প্রত্যবায়জনক। যদি তর্কবাচস্পতি মহাশয়ের দ্বিতীয় ব্যাখ্যা প্রমাণপদবীতে অধিরোহিত হয়, তাহা হইলে মনুর স্বদারগমন বিষয়ক সর্ব্বসম্মত পরিসংখ্যাবিধি দ্বারা পরদারগমনমাত্র নিষিদ্ধ হইবেক, স্বদারগমনের বিহিতত্ব প্রতিপন্ন হইবেক না; সুতরাং স্বদারগমন অবিহিত ও স্বদারগর্ভসম্ভূত ঔরস সন্তানও অবৈধ সন্তান বলিয়া পরিগৃহীত হইবেক। সর্ব্বশাস্ত্রবেত্তা তর্কবাচস্পতি মহাশয় কোনও কালে ধর্ম্মশাস্ত্রের ব্যবসায় বা বিশিষ্টরূপ অনুশীলন করেন নাই; তাহা করিলে, এত অব্যবস্থিত হইতেন না; সকল বিষয়েই একপ্রকার ব্যবস্থা স্থির থাকিত, কোনও বিষয়ে এক স্থলে এক প্রকার ব্যবস্থা দিয়া, স্থলান্তরে সেই বিষয়ে অন্যবিধ ব্যবস্থা সংস্থাপন করিতে প্রবৃত্ত হইতেন না। ফলকথা এই, তর্কবাচস্পতি মহাশয় যখন যাহাতে সুবিধা দেখেন, তাহাই বলেন; যাহা বলিতেছি, তাহা যথার্থ শাস্ত্রার্থ কি না; অথবা পূর্ব্বে যাহা বলিয়াছি এবং এক্ষণে যাহা বলিতেছি, এ উভয়ের পরস্পর বিরোধ ঘটিতেছে কি না, তাহা অনুধাবন করিয়া দেখেন না; এবং, তাঁহার তাদৃশ অনুধাবন করিবার ইচ্ছা ও শক্তি আছে, এরূপও বোধ হয় না। বস্তুতঃ, শাস্ত্র বিষয়ে তিনি সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাচারী।

 তর্কবাচস্পতি মহাশয়, অসবর্ণাবিবাহবিধির পরিসংখ্যাত্ব খণ্ডন করিবার নিমিত্ত, এইরূপ আরও দুই একটি আপত্তি উত্থাপন করিয়াছেন; অকিঞ্চিৎকর ও অনাবশ্যক বিবেচনায়, এ স্থলে আর সে সকলের উল্লেখ ও আলোচনা করা গেল না। যদৃচ্ছাস্থলে যত ইচ্ছা সবর্ণাবিবাহ প্রতিপন্ন করাই তাঁহার মুখ্য উদ্দেশ্য। সেই উদ্দেশ্য সাধনের নিমিত্তই, তিনি অসবর্ণাবিবাহবিধির পরিসংখ্যাত্ব খণ্ডনে প্রাণপণে যত্ন করিয়াছেন। তিনি ভাবিয়াছেন, ঐ বিবাহবিধির পরিসংখ্যাত্ব খণ্ডিত ও অপূর্ব্ববিধিত্ব সংস্থাপিত হইলেই, যদৃচ্ছাক্রমে যত ইচ্ছা সবর্ণাবিবাহ নির্ব্বিবাদে সিদ্ধ হইবেক। কিন্তু সে তাঁহার