পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।
৬৫

ব্যবসায়ী হইলে, তাহাতেই সন্তুষ্ট হইতেন, প্রমাণ নির্দ্দেশ নাই, অতএব তাহা অসিদ্ধ ও অগ্রাহ্য, অনায়াসে এরূপ নির্দেশ করিতেন না। যাহা হউক, ধর্ম্মার্থ বিবাহের নিত্যত্ব বিষয়ে ইতিপূর্ব্বে যে সকল প্রমাণ প্রদর্শিত হইয়াছে, তদ্দর্শনে বোধ করি তাঁহার সংশয় দূর হইতে পারে।

 তৃতীয় আপত্তি;—

  "যদি বল, অকরণে প্রত্যবায়জনকতা নিত্যত্বের হেতু, কিন্তু অকরণে প্রত্যবায়জনকতার নির্ণয়ও বলবৎ শাস্ত্র ব্যতিরেকে হইতে পারে না; কিন্তু তথায় শাস্ত্রের নির্দ্দেশ নাই; অতএব কিরূপে তাদৃশ হেতু দ্বারা সাধ্য সিদ্ধি হইতে পারে, নির্ণীত হেতুই সাধ্যসিদ্ধির প্রয়োজক।

অর্থাৎ, যে কর্ম্মের অকরণে প্রত্যবায় জন্মে অর্থাৎ যাহার লঙ্ঘনে দোষশ্রুতি আছে, তাহাকে নিত্য বলে। কিন্তু অকরণে প্রত্যবায়জনকতা বিবাহের নিত্যত্বসাধক প্রমাণ বলিয়া উপন্যস্ত হইতে পারে না; কারণ, বিবাহের অকরণে প্রত্যবায় জন্মে, বিশিষ্ট শাস্ত্রপ্রমাণ ব্যতিরেকে তাহার নির্ণয় হইতে পারে না; কিন্তু তাদৃশ শাস্ত্রের নির্দ্দেশ নাই। অতএব, অকরণে প্রত্যবায় জন্মে, এই হেতু দর্শাইয়া বিবাহের নিত্যত্ব সাধিত হইতে পারে না।

 এ বিষয়ে বক্তব্য এই যে, এস্থলেও তর্কবাচস্পতি মহাশয় শাস্ত্রব্যবসায়ীর মত কথা বলেন নাই। বিবাহের অকরণে গৃহস্থ ব্যক্তির প্রত্যবায় জন্মে, ইহাও সর্ব্বসম্মত সিদ্ধ বিষয়; এজন্য, অনাবশ্যক বিবেচনায়, প্রথম পুস্তকে তৎপ্রমাণভূত শাস্ত্রের সবিশেষ নির্দ্দেশ করি নাই! তর্কবাচস্পতি মহাশয়ের প্রবোধনার্থে, ইতি পূর্ব্বে তাদৃশ শাস্ত্রও সবিস্তর প্রদর্শিত হইয়াছে। তদ্দর্শনে, বোধ করি, তাঁহার সন্তোষ জন্মিতে পারে।