পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।

তদীয় ঔদ্ধত্য তদপেক্ষা অনেক অধিক। সর্বশেষ শ্রীযুত তারানাথ তর্কবাচস্পতি। তর্কবাচস্পতি মহাশর কলিকাতাস্থ রাজকীয় সংস্কৃতবিদ্যালয়ে ব্যাকরণশাস্ত্রের অধ্যাপনা করিয়া থাকেন, কিন্তু সর্ব্বশাত্রবেত্তা পণ্ডিত বলিয়া সর্ব্বত্র পরিচিত হইয়াছেন, তিনি যে ধর্ম্মশাস্ত্রব্যবসায়ী নহেন, এবং কখনও রীতিমত ধর্ম্মশাস্ত্রের অনুশীলন করেন নাই, তদীয় পুস্তক তদ্বিষয়ে সম্পূর্ণ সাক্ষ্য প্রদান করিতেছে। তিনি যে সকল সিদ্ধান্ত করিয়াছেন, তৎসমুদরই অপসিদ্ধান্ত। অনেকেই বলিয়া থাকেন, তর্কবাচস্পতি মহাশয়ের বুদ্ধি আছে, কিন্তু বুদ্ধির স্থিরতান নাই; নানা শাস্ত্রে দৃষ্টি আছে, কিন্তু কোনও শাস্ত্রে প্রবেশ নাই; বিতণ্ডা করিবার বিলক্ষণ শক্তি আছে, কিন্তু মীমাংসা করিবার তাদৃশী ক্ষমতা নাই। বলিতে অতিশয় দুঃখ উপস্থিত হইতেছে, তিনি, বহুবিবাহবাদ পুস্তক প্রচার দ্বারা, এই কয়টি কথা অনেক অংশে সপ্রমাণ করিয়া দিয়াছেন।

 যাহা হউক, বহুবিবাহবিষয়ক আন্দোলনসংক্রান্ত তদীয় আচরণের পূর্ব্বাপর পর্য্যালোচনা করিয়া দেখিলে, চমৎকৃত হইতে হয়। ছয় বৎসর পূর্ব্বে যখন, বহুবিবাহ প্রথার নিবারণ প্রার্থনায়, রাজদ্বারে আবেদনপত্র প্রদত্ত হয়, তৎকালে তর্কবাচস্পতি মহাশয় নিবারণপক্ষে বিলক্ষণ উৎসাহী ও অনুরাগী ছিলেন এবং স্বতঃপ্রবৃত্ত হইয়া, সাতিশয় আগ্রহসহকারে, আবেদনপত্রে নাম স্বাক্ষর করেন। সেই আবেদনপত্রের স্থূল মর্ম্ম এই; “নয় বৎসর অতীত হইল, যদৃচ্ছাপ্রবৃত্ত বহুবিবাহব্যবহারের নিবারণ প্রার্থনায়, পূর্ব্বতন ব্যবস্থাপক সমাজে ৩২ খানি আবেদনপত্র প্রদত্ত হইয়াছিল। এই অতি জঘন্য, অতি নৃশংস ব্যবহার হইতে যে অশেষবিদ অনর্থসংঘটন হইতেছে, তৎসমুদয় ঐ সকল আবেদনপত্রে সবিস্তর উল্লিখিত হইয়াছে; এজন্য আমরা আর সে সকল বিষয়ের উল্লেখ করিতেছি না। আমাদের মধ্যে অনেকে ঐ সকল আবেদনপত্রে নামস্বাক্ষর করিয়াছেন, এবং ঐ সকল