পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।
৭৫

শ্রাদ্ধ নৈমিত্তিক, কারণ পুত্রের সংস্কারাদিরূপ নিমিত্ত ব্যতিরেকে নান্দীশ্রাদ্ধে অধিকার জন্মে না; গ্রহণশ্রাদ্ধ নৈমিত্তিক, কারণ চন্দ্রসূর্য্যগ্রহণরূপ নিমিত্ত ব্যতিরেকে গ্রহণশ্রাদ্ধে অধিকার জন্মে না। সেইরূপ, স্ত্রী বন্ধ্যা হইলে যে বিবাহ করিবার বিধি আছে, ঐ বিবাহ নৈমিত্তিক, কারণ, স্ত্রীর বন্ধ্যাত্বরূপ নিমিত্ত ব্যতিরেকে তাদৃশ বিবাহে অধিকার জন্মে না; স্ত্রী ব্যভিচারিণী হইলে, যে বিবাহ করিবার বিধি আছে, ঐ বিবাহ নৈমিত্তিক, কারণ স্ত্রীর ব্যভিচাররূপ নিমিত্ত ব্যতিরেকে তাদৃশ বিবাহে অধিকার জন্মে না; স্ত্রী চিররোগিণী হইলে যে বিবাহ করিবার বিধি আছে, ঐ বিবাহ নৈমিত্তিক, কারণ স্ত্রীর চিররোগরূপ নিমিত্ত ব্যতিরেকে তাদৃশ বিবাহে অধিকার জন্মে না। এইরূপে, শাস্ত্রকারেরা, নিমিত্ত বিশেষ নির্দ্দেশ করিয়া, পূর্ব্বপরিণীতা স্ত্রীর জীবদ্দশায়, পুনরায় বিবাহ করিবার যে সকল বিধি দিয়াছেন, সেই সমস্ত বিধি অনুযায়ী বিবাহ নৈমিত্তিক বিবাহ; কারণ; তত্তৎ নিমিত্ত ব্যতিরেকে, পূৰ্বপরিণীতা স্ত্রীর জীবদ্দশায়, পুনরায় বিবাহ করিবার অধিকার জন্মে না।

 উল্লিখিত নৈমিত্তিক লক্ষণ নির্দ্দেশ করিয়া, তর্কবাচস্পতি মহাশয় যে আপত্তি দর্শাইয়াছেন, তাহা কার্য্যকারক নহে। যথা,

 “প্রধম পক্ষ সম্ভব নহে, কারণ কার্য্যমাত্রই কারণসাধ্য, সুতরাং
সকল কার্য্যই নৈমিত্তিক হইয়া পড়ে। এবং তাঁহার অভিমত
নিত্য বিবাহও দানাদিসাধ্য, সুতরাং নিমিত্তাধীন হইতেছে;
এজন্য উহারও নৈমিত্তিক ঘটিয়া উঠে।”

তর্কবাচস্পতি মহাশয় ধর্মশাস্ত্রোক্ত নিমিত্ত ও নৈমিত্তিক শব্দের প্রকৃত অর্থ অবগত নহেন, এজন্য ঈদৃশ অকিঞ্চিৎকর আপত্তি উত্থাপন করিয়াছেন। সামান্যতঃ, নিমিত্তশব্দ কারণবাচী ও নৈমিত্তিক শব্দ কার্য্যবাচী বটে। যথা,