পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৪
বহুবিবাহ।

ঘটিতে পারে না। এ বিষয়ে বক্তব্য এই যে, যদিই মনু, বন্ধ্যাত্ব প্রভৃতি নিশ্চয়ের পর, বিবাহ বিষয়ে অষ্টবর্ষাদি কালপ্রতীক্ষার বিধি দিয়া থাকেন, তাহা হইলেই বন্ধ্যাত্ব প্রভৃতি নিমিত্ত নিবন্ধন বিবাহের নৈমিত্তিকত্ব নিরস্ত কইবেক কেন। পূর্বে ব্যবস্থাপিত হইয়াছে, ঈদৃশ বিবাহ সাবকাশ নৈমিত্তিক; বিশিষ্ট কারণবশতঃ সাবকাশ নৈমিত্তিকে কাল প্রতীক্ষা চলে; সুতরাং নিমিত্তঘটনার অব্যবহিত পরেই উহার অনুষ্ঠানের আবশ্যকতা নাই। যদি ইহা স্থির সিদ্ধান্ত হইত, নৈমিত্তিক কর্ম্মমাত্রে কোনও মতে কাল প্রতীক্ষা চলে না, নিমিত্ত নিশ্চয়ের অব্যবহিত উত্তরকালেই তত্তৎ কর্ম্মের অনুষ্ঠান করিতে হয়, তদ্ব্যতিরেকে, ঐ সকল কর্ম্ম কদাচ নৈমিত্তিক বলিয়া পরিগৃহীত হইতে পারে না; তাহা হইলেই, ঐ বচনোক্ত বিবাহের নৈমিত্তিকত্ব নিরাকৃত হইতে পারি।

 কিঞ্চ, তর্কবাচস্পতি মহাশয় ধর্ম্মশাস্ত্রব্যবসায়ী নহেন, সুতরাং ধর্ম্মশাস্ত্রের মর্ম্মগ্রহে অসমর্থ, সমর্থ হইলে, মনু বন্ধ্যাত্ব প্রভৃতি অবধারণের পর অষ্টবর্ষাদি কাল প্রতীক্ষা করিয়া বিবাহ করিবার বিধি দিয়াছেন, এরূপ অসার ও অসঙ্গত কথা তদীয় লেখনী হইতে নির্গত হইত না। শাস্ত্রকারেরা বিধি দিয়াছেন স্ত্রী বন্ধ্যা, মৃতপুত্রা বা কন্যামাত্রপ্রসবিনী হইলে, পুরুষ পুনরায় বিবাহ করিবেক। সুতরাং, বন্ধ্যাত্ব প্রভৃতি অবধারিত না হইলে, পুরুষ এই বিধি অনুসারে বিবাহে অধিকারী হইতে পারে না। কিন্তু বন্ধ্যাত্ব প্রভৃতি অবধারণের সহজ উপায় নাই। সচরাচর দেখিতে পাওয়া যায়, কিছুকাল স্ত্রীলোকের সন্তান না হইয়া, অধিক বয়সে সন্তান জন্মিয়াছে; উপর্য্যুপরি স্ত্রীলোকের কতকগুলি সন্তান মরিয়া, পরে সন্তান জন্মিয়া রক্ষা পাইয়াছে; ক্রমাগত, স্ত্রীলোকের কতকগুলি কন্যাসন্তান জন্মিয়া, পরে পুত্রসন্তান জন্মিয়াছে। এ অবস্থায়, স্ত্রী বন্ধ্যা, মৃতপুত্রা বা কন্যামাত্রপ্রসবিনী বলিয়া অবধারণ করা সহজ ব্যাপার নহে। রজো-