পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
8
বহুবিবাহ।

আবেদনপত্রে যে সকল কথা লিখিত হইয়াছে, তৎসমুদয় আমরা সকলে অঙ্গীকার করিয়া লইতেছি”। নামস্বাক্ষর করিবার সময়, তর্কবাচস্পতি মহাশয়, আবেদনপত্রের অর্থ অবগত হইয়া, এই আপত্তি করিয়াছিলেন, পূর্ব্বতন আবেদনপত্রে কি কি কথা লিখিত আছে, তাহা অবগত না হইলে, আমি স্বাক্ষর করিতে পারিব না; পরে ঐ আবেদনপত্রের অর্থ অবগত হইয়া, নামস্বাক্ষর করেন। “এ দেশের ধর্মশাস্ত্র অনুসারে, পুরুষ একমাত্র বিবাহে অধিকারী, কিন্তু শাস্ত্রোক্ত নিমিত্ত ঘটিলে, একাধিক বিবাহ করিতে পারেন। এই শাস্ত্রোক্ত নিয়ম লঙ্ঘন করিয়া, যদৃচ্ছাক্রমে যত ইচ্ছা বিবাহ করা এক্ষণে বিলক্ষণ প্রচলিত হইয়া উঠিয়াছে”। ঐ সকল আবেদনপত্রে এই সকল কথা লিখিত আছে, এবং এই সকল কথা বিশিষ্টরূপে অবগত হইয়া, তর্কবাচস্পতি মহাশয় আবেদনপত্রে নামস্বাক্ষর করেন। এই সময়েই আমি, বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচারপুস্তকের প্রথম ভাগ রচনা করিয়া, তাঁহাকে শুনাইয়াছিলাম। শুনিয়া তিনি সাতিশয় সন্তুষ্ট হইয়াছিলেন, এবং শাস্ত্রের যথার্থ ব্যাখ্যা হইয়াছে এই বলিয়া, মুক্তকণ্ঠে সাধুবাদ প্রদান করিয়াছিলেন। এক্ষণে সেই তর্কবাচস্পতি মহাশয় বহুবিবাহরক্ষাপক্ষ অবলম্বন করিয়াছেন এবং বহুবিবাহব্যবহারকে শাস্ত্রসম্মত কর্তব্য কর্ম্ম বলিয়া প্রতিপন্ন করিতে উদ্যত হইয়াছেন।

 তদীয় এতাদৃশ চরিতবৈচিত্র্যের মূল এই। আমার পুস্তক প্রচারিত হইবার অব্যবহিত পরেই, শ্রীযুত ক্ষেত্রপালস্মৃতিরত্ন প্রভৃতি কতিপয় ব্যক্তি, বহুবিবাহকাণ্ড শাস্ত্রানুমোদিত ব্যবহার ইহা প্রতিপন্ন করিবার নিমিত্ত, এক ব্যবস্থাপত্র প্রচার করেন। ঐ সময়ে অনেকে কহিয়াছিলেন, তর্কবাচস্পতি মহাশয়ের পরামর্শে ও সহায়তায় ঐ ব্যবস্থাপত্র প্রচারিত হইয়াছে। কিন্তু আমি তাঁহাকে যদৃচ্ছাপ্রবৃত্ত বহুবিবাহব্যবহারের বিষম বিদ্বেষী বলিয়া জানিতাম, এজন্য তিনি