সুধা লাজুক নহে। যে লজ্জিত না হইয়া বেশ পরিষ্কার করিয়া উত্তর করিল, “আমার নাম শ্রীমতী সুধাবালা দেবী।”
উত্তর শুনিয়া ও সুধার সাহস দেখিয়া, আমার মনে আনন্দ হইল। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “কাল রাত্রে তুমি ভয় পাইয়াছিলে কেন? তোমার শ্বশুর মহাশয় আমায় তখন তোমার ভয়ের কথা বলিতেছিলেন।”
ভয়ের কথা শুনিয়া সুধার মুখ মলিন হইল। সে অতি কষ্টে গত রাত্রের সমস্ত কথা বলিল। অমরেন্দ্র যাহা বলিয়াছিলেন, তাহার সমস্ত মিলিল। আমি সুধাকে জিজ্ঞাসা করিলাম, “তোমার দিদির মৃত্যুর আগে এই রকম শব্দ হইয়াছিল, একথা তোমায় কে বলিল?”
সুধা বলিল, “দিদি নিজেই বলিয়াছিল। সে খুড়া মহাশয়কে পর্য্যন্ত জানাইয়া ছিল, কিন্তু তিনি সে কথা হাসিয়া উড়াইয়া দেন।”
সুধার বয়স বেশী নয়; বোধ হয় এগার বৎসরও পূর্ণ হয় নাই। কিন্তু তাহার গোলগাল গড়ন দেখিয়া, লোকে যুবতী বলিয়া মনে করিতে পারে। সে যে আমায় বিশ্বাস করিয়া শেষোক্ত কথাগুলি কেন বলিল, তাহা জানিও না। আমিও তাহাকে প্রকৃত কথা বলিতে ইচ্ছা করিলাম।
দুই একটা অন্য কথার পর আমি বলিলাম, “দেখ মা! আমি একজন গোয়েন্দা, তোমার ভাবী শ্বশুর মহাশয় আমার উপর তোমার গতরাত্রের ভয়ের বিষয় সন্ধান করিবার ভার দিয়াছেন। সেই জন্যই আমি কৌশলে তোমাকে এখানে আনাইয়া তোমার সহিত সাক্ষাৎ করিয়াছি। আমার কতকগুলি জিজ্ঞাস্য আছে।”